• নতুন চেহারায় শ্রীরামপুর-করুণাময়ী রুটের ৩ নম্বর বাস, যাত্রী পরিবহণ সময়ের অপেক্ষা
    প্রতিদিন | ১০ জুন ২০২৫
  • নব্যেন্দু হাজরা: সেঞ্চুরির দোরগোড়ায় এসে আউট হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু বছরখানেকের মাথাতেই ফের সে রুটে ফিরছে। নতুন ভাবে, নতুন চেহারায়। নতুন রঙে। ফের রাস্তায় ছুটবে ৩ নম্বর বাস। দিনকয়েকের মধ্যেই শ্রীরামপুর থেকে করুণাময়ী যাত্রী নিয়ে ছুটতে দেখা যাবে ঝাঁ-চকচকে হলুদ রঙের এই বাসকে। আপাতত পাঁচটি বাস এই রুটে নামার কথা। পরে যাত্রী দেখে সেই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। স্বাভাবিকভাবেই তিন নম্বর রুট ফিরে আসায় খুশি শ্রীরামপুর থেকে উত্তরপাড়া, হিন্দমোটর, রিষড়া, বালির মানুষজন। এই রুটকে ঘিরে বহু মানুষের বহু স্মৃতি রয়েছে। তাই বন্ধ হওয়া রুটকে চালু করতে একাধিকবার পরিবহণ দপ্তরে চিঠিও দিয়েছিলেন সাধারণ মানুষ। কিন্তু অটো-টোটোর বাড়বাড়ন্তে রুট লাভজন হবে কি না তা ভেবেই বাস নামাতেন না মালিকরা। তবে ফের এই রুট সচল হতে চলেছে। নতুনভাবে।

    হলুদ বডি। ভিতরে ৪৮ সিট। একেবারে ঝকঝকে বাস। তার মালিক রাজু সামন্ত বলেন, “গাড়ি ইতিমধ্যই এসে গিয়েছে। মঙ্গলবার রেজিস্ট্রেশনে যাব। শ্রীকৃষ্ণের ভরসায় বাস নামাচ্ছি। নাম রেখেছি বৃন্দাবন এক্সপ্রেস। আমি নিজেই বাস চালাব। আসলে যাত্রীদের চাহিদা নিজে বুঝতেই এই পরিকল্পনা। এই রুটটার প্রতি আমার ভালোবাসা ছিল। শ্রীরামপুরের মানুষের তো আছেই।” ১৯২৬ সালে হুগলির শ্রীরামপুর থেকে কলকাতার বাগবাজার পর্যন্ত লম্বা রুটে প্রথম পরিষেবা চালু হয়েছিল ৩ নম্বর রুটের। পরে চালু হয় করুণায়ী পর্যন্ত। স্কুল-কলেজের পড়ুয়া থেকে অফিসযাত্রী, সাধারণ মানুষের ভরসার জায়গা ছিল এই ৩ নম্বর। ১০০ বছর পূর্ণ হতে যখন আর মাত্র দু’বছর বাকি, তখনই থেমে যায় এই রুটে চলা শেষ বাসটির চাকা। ২০১০ সালেও ওই রুটে ৬৫টি বাস চলত। সেই সংখ্যা কমতে শুরু করে ২০১৮ সালে ২২-এ এসে দাঁড়ায়। শেষ কয়েক বছর একটি মাত্র বাস চলত। সেই বাসটিও পরে স্ক্র্যাপ হয়ে গেলে এত লম্বা একটা রুট পুরো বন্ধ হয়ে গেল।

    বাসমালিকরা জানান, এই বাসে সবাই যে লং রুটের যাত্রী তা নয়। শর্ট রুটের যাত্রীই বেশি ছিল। গত কয়েক বছরে অটো এবং টোটোর সংখ্যা ঝড়ের গতিতে বাড়ায় যাত্রীরা তাতেই চড়ছেন। ফলে যাত্রীর অভাবে বেশিরভাগ মালিকই বাস বসিয়ে দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, শ্রীরামপুর থেকে বালি পর্যন্ত অংশে জিটি রোড সরু হওয়ায় অটো-টোটো চললে বাস আটকে যায় যানজটে। ফলে নানা প্রতিকূলতার কারণে বন্ধ হয়ে যায় ঐতিহ্যশালী এই রুটটি।

    তবে আবারও সেই রুটে গড়াতে চলেছে বাসের চাকা। শুধু নন এসি নয়। এসি বাসও নামানো হতে পারে। পরিবহণ দপ্তরের এক কর্তা জানান, আপাতত পাঁচটি বাসের অফার লেটার দেওয়া হয়েছে। সারা বাংলা বাস-মিনিবাস সমন্বয় সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এটি একটি ঐতিহ্যশালী বাসরুট। নতুন করে এই রুটে বাস নামছে এটা খুব ভালো উদ্যোগ। আশা করি মানুষও তাঁদের পুরনো এই ৩ নম্বর রুটে বাস পেয়ে খুশি হবেন।”
  • Link to this news (প্রতিদিন)