এই সময়: সাধারণত বর্ষা দেশে ঢোকে ১ জুন। এ বার তার দশ দিন আগেই দক্ষিণ–পশ্চিম মৌসুমি বাতাস এসে পড়েছিল। কেরালা, কর্নাটক, মহারাষ্ট্রে তুমুল বৃষ্টিও শুরু হয়ে যায়।
এদিকে ৮ জুন নয়, উত্তরবঙ্গে বর্ষা ঢুকে পড়েছিল তার দশ দিন আগে ২৯ মে। কিন্তু তারপর সব চুপচাপ। হঠাৎই যেন দম ফুরিয়ে গতি হারিয়েছিল দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু। উত্তরবঙ্গে বর্ষা শুরু হলেও দক্ষিণবঙ্গে এখনও বর্ষার বৃষ্টি নামার কোনও লক্ষণ নেই।
দক্ষিণবঙ্গে মৌসুমি বাতাস কবে ঢুকবে, সে বিষয়ে মৌসম ভবন এখনও কোনও মন্তব্য না করলেও বুধ-বৃহস্পতিবার থেকে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে নতুন করে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির কথা শুনিয়েছেন আবহবিদরা। হয়তো তার পর্ব মিটলেই বর্ষা নামবে রাজ্যের দক্ষিণে।
বৃহস্পতিবার, ১২ জুন থেকে পরের একটি সপ্তাহ পূর্ব ও দক্ষিণ ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে বলে মত আবহবিদদের। দেশে নির্ধারিত সময়ের দশ দিন আগে বর্ষার বাতাস ঢুকে পড়ায় এ বছর মে মাসের গড় তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেকটাই নীচে ছিল।
পুনের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ট্রপিক্যাল মিটিওরোলজির হিসেব অনুযায়ী, ২০২৫–এর মে ছিল ১৯৩৩ সালের পরে ভারতের শীতলতম মে মাস। কিন্তু তারপর মৌসুমি বাতাস পুরোপুরি থমকে যাওয়ায় জুনের ১ থেকে ৬ তারিখ পর্যন্ত দেশে গড়ে মাত্র ১৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর যে শাখা আরব সাগর দিয়ে ঢুকছে, তার উত্তরতম অংশটি এখনও মহারাষ্ট্রের উপরে উঠতে পারেনি বলেই জানাচ্ছেন আবহবিদরা। বঙ্গোপসাগরীয় শাখাটিও আটকে রয়েছে সিকিম ও উত্তরবঙ্গে।
এই কারণেই খাতায়-কলমে দেশে বর্ষাকাল শুরু হয়ে গেলেও পাঞ্জাব ও রাজস্থানে এখনও তাপমাত্রা কমার কোনও লক্ষণ দেখা যায়নি। সোমবারও রাজস্থানের শ্রীগঙ্গানগরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪৭.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মধ্য ভারতে বৃষ্টি শুরু না হলে এই পরিস্থিতির কোনও পরিবর্তন হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।
তবে বাংলায় দ্রুত পরিস্থিতি পরিবর্তন নিয়ে অনেকটাই আশাবাদী আবহবিদরা। বৃহস্পতিবার থেকে পরের ছ’দিন দক্ষিণবঙ্গের অন্তত ৭০ শতাংশ ওয়েদার স্টেশনেই বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
পুরোদস্তুর বর্ষাকাল শুরু না হওয়ায় এই সময়টা বজ্রবিদ্যুতের সম্ভাবনা খুব বেশি থাকবে বলে সতর্কতাও জারি করেছেন আবহবিদরা। এ ছাড়াও বিস্তীর্ণ এলাকার উপর দিয়ে ঘণ্টায় ৪০–৫০ কিলোমিটার গতিতে দমকা হাওয়া বয়ে যাবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।