• সংক্রমণ এড়াতে উদ্ধার বন‌্যপ্রাণীর পুনর্বাসনে কড়া আলিপুর চিড়িয়াখানা
    প্রতিদিন | ০৯ জুন ২০২৫
  • নিরুফা খাতুন: আলিপুরে আবাসিকদের সংখ‌্যা কম নয়। তার উপর যখন তখন বাইরে থেকেও পশুপাখিদের উদ্ধার করে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বন‌্যপ্রাণীদের যেন একমাত্র পুনর্বাসন কেন্দ্র হয়ে উঠেছে আলিপুর। এতে আলিপুর চিড়িয়াখানার আবাসিকদের সংক্রমণের ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়। তার উপর ফের চোখ রাঙাচ্ছে করোনা। আবাসিকদের স্বাস্থ‌্য সুরক্ষার কথা ভেবেই এখন আর উদ্ধার হওয়া সব পশুপাখিকে আলিপুরে পুনর্বাসন দেওয়া হবে না। ভৌগোলিক অবস্থান, দূরত্ব বিচার বিবেচনা করে আলিপুরে তাদের পুনর্বাসন দেওয়া হবে।

    আলিপুর চিড়িয়াখানায় দর্শকদের জন‌্য নয়া নয়া অতিথি নিয়ে এসে থাকে। এছাড়া বাইরে কোথাও বন‌্যপ্রাণী উদ্ধার হলে তাদের মধ্যে অধিকাংশকে আলিপুরে পাঠানো হয়ে থাকে। অনেক সময় পাচারকারীদের হাত থেকে তাদের উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয়। আবার বয়স হয়ে গেলে অনেক বন‌্যপ্রাণী শিকার করতে পারে না। তাদেরও আলিপুরে পুনর্বাসন দেওয়া হয়। আলিপুর চিড়িয়াখানার এক কর্তা জানান, শুধু কলকাতা বা পার্শ্ববর্তী জেলার পশুপাখিদের যে পাঠানো হয়, তা নয়। বর্ধমান, পুরুলিয়া থেকে উদ্ধার হওয়া বন‌্যপ্রাণীদেরও এখানে পাঠানো হয়। আবার উত্তরবঙ্গ থেকেও আসে। অথচ আশপাশ ওই অঞ্চলে ছোট বড় অনেক চিড়িয়াখানা রয়েছে। অভয়ারণ‌্যও রয়েছে। সেখানে তাদের রাখা যায়। কিন্তু তা হয় না। সবাইকে আলিপুরে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এতে আলিপুরে চাপ বাড়ছে। এখানকার আবাসিকদেরও সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

    বনদপ্তর সূত্রে খবর, বাইরে থেকে আসা পশুপাখিরা অনেক ভাইরাস বহন করে থাকে। তাদের অকারণে আলিপুরে নিয়ে আসা মানে এখানকার আবাসিকদের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলা। তাই আগে দেখা হবে, কোন এলাকা থেকে কোন বন‌্যপ্রাণীকে উদ্ধার করা হয়েছে। সেই ডিভিশনে বা তার পার্শ্ববর্তী ডিভিশনে কোনও চিড়িয়াখানা বা অভয়ারণ‌্য রয়েছে কি না দেখা হবে। সেখানে তাদের রাখার উপযুক্ত ব‌্যবস্থাপনা রয়েছে কি না দেখতে হবে। সেক্ষেত্রে তখন উদ্ধার হওয়া বন‌্যপ্রাণীকে ওই চিড়িয়াখানা বা অভয়ারণ্যে পুনর্বাসন দেওয়া হবে। যদি দেখা যায় সংশ্লিষ্ট ডিভিশনে বা তার আশপাশে কোনও চিড়িয়াখানা বা অভয়ারণ‌্য নেই অথবা সেখানে তাদের থাকার উপযুক্ত ব‌্যবস্থা করা যাচ্ছে না তবেই সেই ব‌ন‌্যপ্রাণীকে  আলিপুরে পুনর্বাসন দেওয়া হবে।

    সাধারণত বাইরে থেকে কোনও পশুপাখি এলে তাদের কোয়ারান্টাইন করতে হয়। আলিপুর চিড়িয়াখানায় আলাদা করে কোয়ারান্টাইন সেন্টার নেই। আইসোলেশন সেন্টারে তাদের রাখতে হয়। সেখানেও আগে থেকে অনেকে থাকে। এছাড়া সেখানে কর্মরত কর্মীরা থাকেন। তাঁদের মাধ‌্যম হয়েও চিড়িয়াখানার সদস‌্যদের মধ্যে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা থাকে। তার উপর ফের করোনা মাথাচাড়া দিচ্ছে। আবাসিকদের সংক্রমণ রুখতে এই উদ্যোগ নিয়েছে বনদপ্তর।
  • Link to this news (প্রতিদিন)