অশীন বিশ্বাস, ব্যারাকপুর
ঘরে বসে দলের কর্মীদের নির্দেশ দিয়ে দায় সারলে হবে না, জনসংযোগ বাড়াতে কাউন্সিলারদের প্রতিদিন পাঁচজনের বাড়িতে যেতে হবে। কথা বলতে হবে বাড়ির প্রত্যেকটি মানুষের সঙ্গে।
তাদের কোনও সমস্যা, অসুবিধা রয়েছে কিনা, সরকারি প্রকল্পের সুবিধা তারা ঠিকমতো পাচ্ছেন কি না সে সমস্ত মন দিয়ে শুনতে হবে এবং সমস্যা থাকলে দ্রুত তা সমাধানের উদ্যোগ নিতে হবে।
তৃণমূলের ব্যারাকপুর-দমদম সাংগঠনিক জেলায় বিধানসভা ভিত্তিক কর্মিসভায় দলীয় নেতৃত্বের এমন নির্দেশের মধ্যে দিয়ে একদিকে আসন্ন একুশে জুলাই এবং আর একদিকে বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি একসঙ্গে শুরু করে দিল তৃণমূল।
গত ১৬ মে ব্যারাকপুর-দমদম সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি পদে দায়িত্ব নিয়েছেন ব্যারাকপুরের সাংসদ পার্থ ভৌমিক। দলের দায়িত্ব কাঁধে নিয়েই শুরু করে দিয়েছেন দলীয় কর্মসূচি। যার প্রথম ধাপ হিসেবে বিধানসভা ভিত্তিক কর্মিসভা চলছে।
গত বুধবার থেকে বিধানসভা ধরে ধরে কর্মিসভা শুরু হয়ে গিয়েছে জেলাজুড়ে। শনিবার কোনও কর্মিসভা ছিল না। রবিবার ব্যারাকপুর এবং জগদ্দলে কর্মিসভা হয়। উত্তর ২৪ পরগনা বাদে রাজ্যের অন্য কোনও জেলায় সে ভাবে এখনও কর্মিসভা শুরু হয়নি বলেই খবর।
রাজনৈতিক মহলের কথায়, পার্থ ভৌমিক বিলক্ষণ জানেন বিধানসভা নির্বাচনের বৈতরণী পার হতে কর্মীরাই প্রধান ভরসা। ফলে তাঁদের মনোবল বাড়িয়ে মাঠে নামাতে না পারলে লক্ষ্যে পৌঁছনো অসম্ভব।
সে কারণেই লড়াইয়ের প্রথম অস্ত্র হিসেবে কর্মীদের মাঠে নামিয়ে একদিকে একুশে জুলাইয়ের প্রস্তুতি এবং আর একদিকে বিধানসভা ভোটের দামামা বাজিয়ে দিলেন সাংসদ।
ইতিমধ্যে দমদম, উত্তর দমদম, কামারহাটি, নৈহাটি, আমডাঙায় বিধানসভা ভিত্তিক কর্মিসভা হয়ে গিয়েছে। শুক্রবার নোয়াপাড়া এবং বীজপুরে কর্মিসভা হয়। বক্তার তালিকায় অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের মতো নেতাদের পাশাপাশি মদন মিত্র, নির্মল ঘোষ, সোমনাথ শ্যাম, সুবোধ অধিকারী, রাজ চক্রবর্তী এবং পার্থ নিজে কর্মীদের আগামীর পথ বাতলে দিচ্ছেন। কর্মিসভা গুলিতে উপচে পড়ছে ভিড়।
কর্মীদের আবেগে যাতে কোনও ভাটা না পড়ে সে জন্য বুথ স্তরে নিয়মিত দলীয় কর্মসূচি নেওয়ার পাশাপাশি যে সব এলাকায় বুথ কমিটি এবং ওয়ার্ড কমিটি নেই তা দ্রুত করে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
একুশে জুলাইয়ের প্রস্তুতি হিসেবে প্রত্যেক কাউন্সিলারকে নিজের ওয়ার্ডে কমপক্ষে পাঁচটি করে দেওয়াল লেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বুথ, টাউন এবং ব্লক স্তরের নেতাদেরও তাদের মতো করে দেওয়াল লিখতে হবে।
কাউন্সিলারদের স্পষ্ট বার্তা, আগামী পুর নির্বাচনে টিকিট পাওয়ার অন্যতম মাপকাঠি হিসেবে তাঁর ওয়ার্ডে লোকসভা এবং বিধানসভা ভোটের ফলাফলকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে।
পার্থ ভৌমিক বলেন, ‘আমরা কর্মীদের নিয়ে সভা শুরু করেছি। তাতে কর্মীদের ভিড় লক্ষণীয়। আমার সাংগঠনিক জেলায় ১৪টি আসনের মধ্যে বিরোধীরা যাতে একটিও আসন না পায় সেটাই আমাদের লক্ষ্য। সেই লক্ষেই আমাদের নেতা–কর্মীরা বাড়ি বাড়ি যাওয়ার কাজ শুরু করেছেন।’