নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: নিকট ভবিষ্যতে বর্ধমানের রাস্তায় বাস, পণ্যবাহী গাড়ির স্টিয়ারিংয়ে গৃহবধূ কিংবা যুবতীদের দেখলে অবাক হওয়ার কিছু নেই। পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন গৃহবধূ, যুবতীদের গাড়ি চালাতে উৎসাহিত করতে উদ্যোগ নিয়েছে। উৎসাহীদের লাইসেন্স দেওয়ার জন্য বিশেষ ক্যাম্প করা হবে। এ ক্ষেত্রে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা অগ্রাধিকার পাবেন। এছাড়া ১৮ উত্তীর্ণ যুবতীরাও প্রশিক্ষণ পাবেন। পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক আয়েশা রানি এ বলেন, মেয়েদের স্বনির্ভর করতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অনেকেই গাড়ি চালাতে পারেন। তাঁদের আরও ভালো ভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়ার পরই লাইসেন্স দেওয়া হবে। কিছুদিনের মধ্যেই এই প্রক্রিয়া শুরু হবে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় কোনও যুবতী বা গৃহবধূ বাস কিংবা পণ্যবাহী গাড়ি চালাচ্ছেন এমন নমুনা নেই। তবে কাজটা কঠিন নয়। মেয়েরা প্রশিক্ষণ নিলে সহজেই এই কাজ করতে পারেন। গাড়ি চালানো শিখে গেল তাঁদের আয় বাড়বে। স্বনির্ভরগোষ্ঠী গুলি লোন পায়। তাঁরা লোন নিয়ে গাড়ি কিনতে পারবেন। জেলার স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি বিভিন্ন ধরনের কাজ করে নজর কেড়েছে। জেলায় জরি শিল্প বা কাঁথাস্টিচের কাজ আরও ভালো ভাবে করার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। বাঁধা গতের কাজ ছেড়ে তাঁরা যাতে রোজগারের জন্য নতুন নতুন পথ খুঁজে পান তারজন্য প্রশাসন একাধিক পদক্ষেপ করছে। আধিকারিকরা বলেন, ভালো ভাবে গাড়ি চালানো শেখার পরই তাঁদের লাইসেন্স দেওয়া হবে। ট্রাফিক আইন সম্পর্কে তাঁদের জানতে হবে। শহরের পাশাপাশি গ্রামীণ এলাকার মহিলারাও অটো বা অন্য যানবাহন চালিয়ে আয় করতে পারবেন। বেশ কয়েকটি নতুন রুটে পারমিট দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। ওই রুটগুলিতে অটো, ট্রেকার জাতীয় যানবাহন চলবে। মহিলাদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। পরিবহণ দপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, যানবাহন চালাতে বিশেষ পরিশ্রমের দরকার হয় না। তবে খুব সতর্ক থাকতে হয়। মহিলাদের প্রশিক্ষণ দিলে তাঁরা ভালোভাবেই এই কাজ করতে পারবেন। তবে ট্রাফিক আইন না মানলে তাঁদের ক্ষেত্রেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখন প্রতি মাসেই চালকদের লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত করা হয়। অনেকের লাইসেন্স বাতিল করা হয়। বেশির ভাগ বাইক চালকের লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। মদ্যপ অবস্থায় বাইক চালাতে গিয়ে কেউ ধরা পড়লে কঠোর পদক্ষেপ করা হয়। লাইসেন্স বাতিলের পাশাপাশি চালকদের বিরুদ্ধে কেস দেওয়া হয়। মহিলা চালকদেরও সমস্ত নিয়ম মানতে হবে। যাত্রীবাহী গাড়ির স্টিয়ারিং তাঁদের হাতে থাকবে। সে ক্ষেত্রে তাঁদের দায়িত্বও বেশি থাকবে। জেলাশাসক বলেন, মহিলারা সব কাজেই এখন এগিয়ে আসছেন। চালকের ভূমিকাতেও তাঁরা সফল হবেন।