নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: সোমবার সকালে বাঁকুড়ায় ট্রাক ও ছোট পণ্যবাহী গাড়ির সংঘর্ষে এক প্রৌঢ়ের মৃত্যু ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। পুলিসের তাড়া খেয়ে পালাতে গিয়েই ট্রাকটি ছোট গাড়িতে ধাক্কা মেরেছে, এই অভিযোগে স্থানীয়রা তুমুল বিক্ষোভ দেখান। পুলিস অবশ্য ট্রাককে তাড়া করার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
এদিন সকালে বাঁকুড়া সদর থানার এক্তেশ্বরে ১৪নম্বর জাতীয় সড়কে দ্বারকেশ্বর সেতুর কাছে একটি ট্রাক ফলবোঝাই ছোট গাড়ির পিছনে প্রচণ্ড জোরে ধাক্কা মারে। ঘটনাস্থলেই ছোট গাড়িটির চালক আবুল খয়ের মোল্লার(৫৭) মৃত্যু হয়। তাঁর বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গড়বেতা থানার সাতবাঁকুড়া নবকোল এলাকায়। পুলিস ঘাতক ট্রাকটি আটক করলেও চালক পলাতক।
এই দুর্ঘটনার পরই এলাকার বাসিন্দারা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। তাঁরা বেশ কিছুক্ষণ জাতীয় সড়ক অবরোধ করে পুলিসের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেন। অভিযোগ, পুলিসের তাড়া খেয়ে পালানোর সময়ই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ওই ট্রাকটি ফলবোঝাই গাড়ির পিছনে ধাক্কা মারে। পরে পুলিস বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এলাকার বাসিন্দা বাবলু মহাপাত্র, পাপাই গরাই বলেন, প্রতি রাতেই এক্তেশ্বরে সেতু লাগোয়া এলাকায় জাতীয় সড়ক দিয়ে যাওয়া পণ্যবাহী গাড়ি থেকে পুলিস টাকা আদায় করে। ট্রাক চালকদের কেউ টাকা না দিয়ে পালানোর চেষ্টা করলে পুলিস পিছু ধাওয়া করে। তখন চালকরা বেপরোয়াভাবে ট্রাক ছুটিয়ে দিলে দুর্ঘটনা ঘটে যায়। তাঁদের অভিযোগ, এদিনও সেকারণেই দুর্ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয়দের দাবি, অবিলম্বে পুলিসকে এসব বন্ধ করতে হবে। এবিষয়ে পুলিসের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের হস্তক্ষেপ করতে হবে।
বাঁকুড়া সদর থানার এক আধিকারিক বলেন, দুর্ঘটনার সময় এক্তেশ্বর এলাকায় আমাদের কোনও টহলদারি ভ্যান ছিল না। ট্রাফিক বিভাগের কোনও গাড়ি থাকলেও তারা সাধারণত বেআইনি পণ্যবাহী ট্রাককে তাড়া করে না। তাছাড়া, জাতীয় সড়কে বাঁকুড়া শহর ও লাগোয়া হেভির মোড়, কেরানিবাঁধ, ধলডাঙ্গায় আমাদের টহলদারি ভ্যান থাকে। কোনও ট্রাক পালানোর চেষ্টা করলেও তাড়া করার প্রয়োজন নেই। পরবর্তী চেকপয়েন্টে থাকা পুলিসকর্মী ও আধিকারিকদের ফোন করে দিলেই তাঁরা সেখানে ট্রাকটি থামিয়ে দেবেন। স্থানীয়দের অভিযোগ ভিত্তিহীন।
রবিবার রাতে গঙ্গাজলঘাটি থানা এলাকায় একটি ট্রাক্টর উল্টে চালকের মৃত্যু হয়েছে। পুলিস জানিয়েছে, মৃতের নাম তুলসী ঘোষ(৫৯)। তাঁর বাড়ি ওই থানার ফেগোশোল গ্রামে। তুলসীবাবু ওইদিন রাতে নিজের ট্রাক্টর চালিয়ে গ্রাম লাগোয়া খেতে চাষের কাজ করেন। কাজ সেরে বাড়ি ফেরার পথে রাতের অন্ধকারে ট্রাক্টরটি উল্টে যায়। তুলসীবাবু ট্রাক্টরের তলায় চাপা পড়ে গুরুতর জখম হন। তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় অমরকানন গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। সোমবার দেহ ময়নাতদন্তের জন্য বাঁকুড়া মেডিক্যালের মর্গে পাঠানো হয়।