• ব্যাপক বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত কার্শিয়াংয়ের গাড়িধুরা
    বর্তমান | ০৩ জুন ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: বজ্র-বিদ্যুৎ সহ বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত কার্শিয়াং পাহাড়ের গাড়িধুরা। রবিবার রাতে মাত্র ১৫ মিনিটের বৃষ্টিতে প্রচুর গাছ ও বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়েছে। আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাঁচটি বাড়ি। শুধু তাই নয়, সোমবার সকালে কার্শিয়াংয়ে ধসের জেরে দু’টি এলাকার রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এদিকে, তিস্তা নদী ফুলেফেঁপে ওঠায় ফের যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হল কালিম্পং ও সিকিমের লাইফ লাইন ১০ নম্বর জাতীয় সড়কে। গত বর্ষার মরশুমে সংশ্লিষ্ট রাস্তার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলিতে এবারও তিস্তা ছোবল বসাতে পারে বলে আশঙ্কা। এজন্যই সোমবার ৬টা ঘণ্টা রাস্তাটি দিয়ে যানবাহন চলাচল করতে দেওয়া হয়নি। আজ, মঙ্গলবারও এই নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে বলে জানিয়েছে ন্যাশনাল হাইওয়ে অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন। 

    ওই রাতে দার্জিলিং জেলার বিভিন্ন প্রান্তে বৃষ্টি হয়েছে। যারমধ্যে বজ্র-বিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি সবচেয়ে বেশি ছিল গাড়িধুড়ায়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাত ১২টা নাগাদ বজ্র-বিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি নামে। সঙ্গে ছিল ব্যাপক ঝোড়ো হাওয়া। তা ১৫ মিনিট ধরে চলে। তাতেই একের পর এক বিশাল গাছ উপড়ে পড়ে। এতে কিছু রাস্তা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। পাঁচটি বাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরবাইরে কিছু বিদ্যুতের খুঁটি পড়ে যায়। কিছু খুঁটি হেলে যায়। বিদ্যুতের তারও ছিঁড়ে গিয়েছে। এরজেরে গোটা এলাকা রাতভর বিদ্যুৎহীন ছিল। 

    এদিন সকালে কার্শিয়াং শহরের ৯ ও ২০ নম্বর ওয়ার্ডে নামে ধস। সংশ্লিষ্ট দু’টি জায়গায় রাস্তা ও একটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সমগ্র পরিস্থিতি নিয়ে এদিন পর্যালোচনা বৈঠক করেন কার্শিয়াংয়ের মহকুমা শাসক। পুরসভা, বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা, বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানি, দমকল বাহিনীর প্রতিনিধিরা হাজির ছিলেন বৈঠকে। প্রশাসন সূত্রে খবর, রাত থেকেই গাড়িধুড়ায় বিপর্যয় মোকাবিলার কাজ করছে বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির এবং প্রশাসনের দু’টি কিউআরটি। রাতেই তারা গাছ কেটে রাস্তা পরিষ্কার করে দিয়েছে। সোমবার বিকেল পর্যন্ত কাজ করে বিদ্যুৎ পরিষেবা প্রায় স্বাভাবিক করা হয়েছে। আজ, সেখানে ফের বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করার কাজ চলবে। কার্শিয়াং পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান সুভাষ প্রধান বলেন, শহরের ধস ও গাড়িধুরার ঝড়, বৃষ্টির তাণ্ডব নিয়ে প্রশাসন ব্যবস্থা নিয়েছে। সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলির উপর নজর রাখা হচ্ছে। প্রশাসনের নির্দেশে সকলেই এ ব্যাপারে সতর্ক রয়েছে। 

    এদিকে, শিলিগুড়ির সঙ্গে কালিম্পং ও সিকিমের সরাসরি যোগাযোগের প্রধান রাস্তা ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। যা কালিম্পং ও সিকিমের লাইফ লাইন হিসেবে পরিচিত। গত বর্ষায় তিস্তার ছোবলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সংশ্লিষ্ট সড়কের সানতালি, লিকুভীর ও মেলি এলাকা। এবার নদীর জল বাড়তেই সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলি নিয়ে উদ্বিগ্ন বিভিন্ন মহল। তাদের আশঙ্কা, এবারও সেখানে থাবা বসাতে পারে তিস্তা। তাই সংশ্লিষ্ট রাস্তা দিয়ে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করছে এনএইচআইডিসিএল। তারা এদিন সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট সড়ক রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কোনও যানবাহন চলাচল করতে দেয়নি। আজও, এই নির্দেশ কার্যকর হবে।  গাড়িধুরায় রাস্তার উপর ভেঙে পড়েছে গাছ। - নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)