বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল প্রেমিক, ফিরিয়েও দেয়! অপমানে পরদিনই ‘আত্মঘাতী’ কিশোরী
প্রতিদিন | ০৩ জুন ২০২৫
শংকরকুমার রায়, রায়গঞ্জ: পরিবারের অসম্মান! সহ্য করতে না পেরে গলায় ওড়নার ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী নাবালিকা। সোমবার দুপুরে উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদের সীমান্তবর্তী দরিমানপুর এলাকার মর্মান্তিক ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। অভিযোগ, গতকাল, রবিবার রাতে কিশোরীর ‘প্রেমিক’ বাড়ি থেকে তাকে ‘তুলে’ নিয়ে যায়। আবার রাতেই ফিরিয়েও দিয়ে যায় তাকে। এরপরই এলাকায় জোর চর্চা শুরু হয়। পরিবারের সম্মানহানিকর কথা ছড়িয়ে পড়ে। তারপরই গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে সে।
১৫ বছরের কিশোরী দরিমানপুর হাই স্কুলের ছাত্রী ছিল। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সকালে বাবা-মায়ের সঙ্গে সকালের জলখাবারও খায় কিশোরী। কিন্তু পারিবারিক সম্মানহানিকর কথা কানে যেতেই নিজেকে ঘরবন্দি করে ফেলে সে। এক মাস ছুটির পর স্কুল খুললেও যায়নি। খবর পেয়ে বিকেলে শোওয়ার ঘর থেকে ওই নাবালিকার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। দেহ ময়নাতদন্তের জন্য রায়য়গঞ্জ মেডিক্যাল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়ে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, নাবালিকার সঙ্গে স্থানীয় এক যুবকের সাত মাস ধরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। বিয়ের কথাবার্তাও পাকা হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তার মাঝে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে গেল। এদিকে মেয়েকে হারিয়ে দিশাহারা বাবা কান্নাভেজা স্বরে বলেন,”রবিবার রাতে বাড়িতে এসে গোয়ালতোরের যুবক আমার মেয়েকে তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়। তারপর রাতেই আবার মেয়েকে আমার বাড়িতে ফিরিয়ে দেয়। ওই যুবকের পরিবার থেকে মেয়েকে বিয়ে প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু আমি বলেছিলাম, মেয়ে বড় হোক, তারপর বিয়ের কথা ভাবা যাবে। আমার মনে হয়, ছেলের পরিবারের লোকজন এমন কথা বলেছিল যাতে মেয়ে প্রচণ্ড অপমানিত হয়। তাতেই আত্মহত্যা করেছে।”
পরিবারের তরফে হেমতাবাদ থানায় অভিযোগ জানানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট থানার আইসি সুজিত লামা অবশ্য বলেন,”কোন অপহরণ কিংবা কোন পরিবারের বিরুদ্ধে সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। তবে প্রাথমিকভাবে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।” অন্যদিকে রবিবার রাতে যে বাড়িতে ওই কিশোরীকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল,সেই পরিবারের সদস্যদের খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ।