• সুপারি কিলার ভাড়া করে টুকরো টুকরো করে খুন, মেঝে খুঁড়তেই মিলল মালদার নিখোঁজ যুবকের দেহ
    এই সময় | ০২ জুন ২০২৫
  • এ যেন বলিউড থ্রিলার। হাড়হিম হত্যাকাণ্ড মালদায়। কাকিমার বাড়ির মেঝে খুঁড়তেই বেরিয়ে এল ১৫ দিন ধরে নিখোঁজ ভাইপোর দেহ। খুনের পরে কুপিয়ে টুকরো টুকরো করে দেহ মেঝেয় পুঁতে প্লাস্টার করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। প্রাথমিক তদন্তের পুলিশের সন্দেহ, কাকিমার সঙ্গে পেশায় ঠিকাদার ভাইপোর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। সেই পরকীয়া সম্পর্কের জেরে এবং মোটা টাকার লেনদেনকে কেন্দ্র করেই এই খুন।

    গত ১৫ দিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন চাঁচল মহকুমার পুখুরিয়া থানার কোকলামারি এলাকার বাসিন্দা সাদ্দাম নাদাপ (৩৬) নামে ওই ঠিকাদার। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ইংরেজবাজারের বাপুজি কলোনির বাসিন্দা কাকিমা মৌমিতা হাসানের বাড়ির একতলা অফিস ঘর হিসেবে ভাড়া নেন ভাইপো সাদ্দাম। শ্রমিক সরবরাহের পাশাপাশি জমি জায়গার বেচাকেনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন সাদ্দাম নাদাপ। গত ১৮ মে অফিস থেকে রাতে বাড়ি ফেরার সময় রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হন তিনি।

    ইংরেজবাজার থানায় পুখুরিয়া থেকে এসে তাঁর পরিবারের লোকেরা মিসিং ডায়েরি করে। নিখোঁজের দিন ব্যবসার ২৫ লক্ষ টাকা নিয়ে তিনি বাড়ি ফিরছিলেন বলেও জানায় তাঁর পরিবার। পরে সাদ্দামের কাকিমার উপর সন্দেহ হওয়ায় তাঁর নাম করে ২৩ মে আবারও থানায় অভিযোগ দায়ের করেন সাদ্দামের স্ত্রী নাসরিন খাতুন । এরপরই পুলিশ রবিবার সাদ্দামের কাকিমা মৌমিতাকে গ্রেপ্তার করে। তাঁর কাকিমা মৌমিতা হাসানের বাড়ি ইংরেজবাজার শহরের কৃষ্ণপল্লি বাপুজি কলোনি এলাকায় । মৌমিতার স্বামীর নাম রহমান নাদাপ। তিনি পেশায় সরকারি স্কুলের শিক্ষক।

    পুলিশের দাবি, জেরায় সাদ্দামকে খুনের কথা স্বীকার করে মৌমিতা। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তপন এলাকায় মৌমিতার বাবার বাড়ি। সেখানে তাঁদের বাড়ি তৈরি হচ্ছে। সেই বাড়িতেই গত ১৮ মে সাদ্দামকে প্রলোভন দিয়ে নিয়ে আসে তার কাকিমা মৌমিতা।

    গত পাঁচ বছর ধরে সাদ্দামের সঙ্গে তাঁর কাকিমার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। সেখানে সুপারি কিলারকে দিয়ে মাংস কাটার মতো সাদ্দামের দেহ টুকরো করা হয় বলে পুলিশকে জানায় মৌমিতা। পরে সেই দেহের অংশ নির্মীয়মান বাড়ির মেঝেতে পুঁতে বালি সিমেন্ট দিয়ে ঢালাই করে দেওয়া হয়। খুন করে দেহ লোপাট করতে তিন থেকে চারজন দুষ্কৃতীর সাহায্য নেওয়া হয় বলে পুলিশের সন্দেহ।সোমবার তপন এলাকা থেকেই মৃত ওই ঠিকাদারের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

    পুলিশ জানিয়েছে, মোটা টাকার লেনদেনকে কেন্দ্র করেই কাকিমার সঙ্গে গোলমাল চলছিল ভাইপো সাদ্দামের । তার জেরে খুন করা হয়ে থাকতে পারে। এ দিনআদালতে যাওয়ার পথে ধৃত মৌমিতা হাসান জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে তাঁকে ব্ল্যাকমেল করছিলেন সাদ্দাম। তাঁর স্বামী ও নাবালক সন্তানকে খুনের হুমকি দেওয়া হচ্ছিল । তাই পথের কাঁটা দূর করতে সাদ্দামকে খুন করেন তিনি।

  • Link to this news (এই সময়)