এই সময়: বছরের সপ্তম মরণোত্তর অঙ্গদানের সাক্ষী রইল শহর। পথ দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হাওড়ার তরুণের এসএসকেএমে ব্রেন ডেথের পরে তাঁর লিভার ও দু’টি কিডনিতে নবজীবন পেলেন তিন জন। মৃতের নাম পুষ্কর পাল (২৩)।
রবিবার এই তিনটি অঙ্গ প্রতিস্থাপনের অস্ত্রোপচারের পরে আপাতত অঙ্গ গ্রহীতারা স্থিতিশীল রয়েছেন বলে খবর রিজিওনাল অর্গান অ্যান্ড টিস্যু ট্রান্সপ্লান্ট অর্গানাইজ়েশন (রোটো) সূত্রে। চলতি বছরে এই নিয়ে মোট ২১ জন অঙ্গ বৈকল্যের রোগী জীবনের মূল স্রোতে ফিরলেন, যার মধ্যে রয়েছেন রবিবারের তিন মধ্যবয়সি মহিলাও। মৃতের পরিবারের মরণোত্তর অঙ্গদানের সিদ্ধান্তকে কুর্নিশ জানিয়েছে তিন অঙ্গ গ্রহীতার পরিবার।
আমতার নারিট গাজিপুর এলাকায় পুষ্কর অত্যন্ত প্রাণচঞ্চল হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। গত বৃহস্পতিবার, ২৯ মে রাতে দুই বন্ধুকে বাড়ি পৌঁছে দিয়ে ফেরার সময়ে ভয়াবহ মোটর সাইকেল দুর্ঘটনায় পড়েন তিনি। একটি লরিকে সাইড দিতে গিয়ে পিছলে যায় তাঁর বাইকের চাকা। ছিটকে পড়লে মাথায় গুরুতর আঘাত লাগে পুষ্করের। তাঁর বন্ধু স্বদেশ পাল জানান, প্রথমে পুষ্করকে আমতা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকেই এসএসকেএমের ট্রমা কেয়ার সেন্টারে রেফার করা হয়। কিন্তু দুর্ঘটনায় হারানো জ্ঞান আর ফেরেনি। শুক্রবারেই চিকিৎসকরা বুঝে যান, ক্রমেই ব্রেন ডেথের দিকে এগোচ্ছেন রোগী।
শনিবার রাতে পুষ্করের ব্রেন ডেথ ঘোষণা করা হয় এসএসকেএমে। তখন থেকেই রোটো–র তরফে অঙ্গ গ্রহীতার খোঁজ শুরু হয়ে যায়। রবিবার পুষ্করের একটি কিডনি কম্যান্ড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক বছর বাহান্নর মহিলার শরীরে এবং তাঁর অন্য কিডনিটি এসএসকেএমে ভর্তি বছর পঁয়ত্রিশের এক মহিলার শরীরে প্রতিস্থাপিত হয়। এসএসকেএম–এই চিকিৎসাধীন বছর সাতচল্লিশের এক লিভার সিরোসিস রোগিণীর শরীরে প্রতিস্থাপিত হয়েছে পুষ্করের লিভার। হাসপাতাল সূত্রে খবর, সফল প্রতিস্থাপনের পরে ধীরে হলেও তাঁদের শারীরিক অবস্থার উন্নতির সূচক ধরা পড়েছে অভিজ্ঞ চিকিৎসকদের চোখে।