এই সময়: কাঁটাতারহীন ভারত-বাংলাদেশ জলসীমান্তের সুরক্ষায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব গোবিন্দ মোহনকে ফ্লোটিং আউটপোস্ট তৈরি–সহ একগুচ্ছ প্রস্তাব দিল রাজ্য সরকার। রবিবার কলকাতায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে বৈঠকে রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ জানান, জলপথ সীমান্তের সুরক্ষাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এর জন্য ফ্লোটিং আউটপোস্ট তৈরির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে রাজ্যের পক্ষ থেকে।
কারণ সুন্দরবন এলাকার আন্তর্জাতিক জলপথ সীমান্তে উপকূলরক্ষী বাহিনী থাকলেও উত্তর ২৪ পরগনা, মুর্শিদাবাদ, মালদহ–সহ বিভিন্ন জেলায় জলসীমান্ত রয়েছে। সেখানে জলপথে বিএসএফ টহল দিলেও নজরদারির কাজটা মূলত হয় নদী থেকে। তাই রাজ্য সরকার নদীতেই এই ফ্লোটিং আউটপোস্ট তৈরি করতে চায়।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে বৈঠকে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব নন্দিনী চক্রবর্তী, রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার উপস্থিতি ছিলেন। বৈঠকে উত্তরবঙ্গের সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলি, বিশেষ করে চিকেন্স নেকের সুরক্ষায় নজরদারি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব অনুপ্রবেশ রুখতে রাজ্য পুলিশকেও বিএসএফকে সহযোগিতা করার পরমার্শ দিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘বিএসএফ সতর্ক রয়েছে। রাজ্য পুলিশকেও এই বিষয়ে তাদের সহযোগিতা করতে হবে। প্রয়োজনীয় ইনপুটও দিতে হবে বিএসএফকে।’
এ দিনের বৈঠকে স্থলসীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়। এর জন্য প্রয়োজনীয় জমির ব্যবস্থা দ্রুত করার জন্য রাজ্যকে উদ্যোগী হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব। তিনি প্রশ্ন তোলেন, জমি কেনার জন্য রাজ্যকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক থেকে টাকা দেওয়া হচ্ছে। তারপরও জমি পেতে এত দেরি হচ্ছে কেন?
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ সীমান্তে কাঁটাতার দিতে রাজ্য মন্ত্রিসভা ইতিমধ্যেই কয়েক দফায়, ২৬৬.৭১ কিলোমিটার জমি নেওয়ার ছাড়পত্র দিয়েছে। এর মধ্যে ১১২.৩ কিমি কাঁটাতার দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় জমি কিনতে ২২১ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। বাকি ১৫৪ কিমির জন্য প্রয়োজনীয় জমি কিনতে কত টাকা প্রয়োজন, তা এখনও জানা যায়নি।
এ দিনের বৈঠকে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা আইনের কার্যকারিতা, ডিজিটাল অ্যারেস্ট নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব সাইবার ক্রাইম ও ডিজিটাল অ্যারেস্ট নিয়ন্ত্রণে রাজ্যকে সোশ্যাল নেটওয়ার্কের উপরে নজরদারির প্রস্তাব দেন তিনি। কারণ এই সোশ্যাল নেটওয়ার্কেই ফাঁদ পাতে সাইবার প্রতারকরা। রাজ্যের পুলিশ অফিসারদের ভারতীয় ন্যায় সংহিতা আইনের বিভিন্ন অংশ নিয়ে প্রশিক্ষণের উপরেও শুরুত্ব দেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব।