অর্পিতা হাজরা
ম্যাট্রিমনি সাইটে আলাপ দুজনের। তার পরেই ঘনিষ্ঠতা, ফোনে কথোপকথন। সেখান থেকে সম্পর্কের রসায়ন শুরু। কিন্তু মধুরেণ সমাপয়েৎ হলো কই! বরং আলাপের কিছুদিনের মধ্যে পাত্রীর থেকে টাকা নিয়ে বেপাত্তা পাত্র! এমন ঘটনা শহর–জেলায় নিরন্তর ঘটে চলেছে। এই নিয়ে নেটিজ়েনকে সর্তক করতে কলকাতা পুলিশের তরফে এই প্রথম রিলস–শর্টস বানিয়ে প্রচার শুরু করতে চাইছে। এআই–এর সাহায্যেও কনটেন্ট ক্রিয়েট করে বানানো হবে ভিডিয়ো। ইতিমধ্যে লালবাজার একটি সংস্থার সঙ্গে সেই ব্যাপারে কথাবার্তা বলেছে।
কেউ বিয়ের জন্য, কেউ বন্ধুত্ব, আবার কেউ স্রেফ ‘সিচুয়েশনশিপ’–এর খোঁজেও ম্যাট্রিমনি সাইট বা ডেটিং অ্যাপে উঁকি দেন। সেখানে কারও সঙ্গে সামান্য কিছুদিনের পরিচয়েই আচমকা ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। দেখা যায়, তার পরেই অ্যাকাউন্ট থেকে উধাও হয়ে যায় লক্ষ লক্ষ টাকা। প্রতারক কখনও পাত্র, কখনও পাত্রীও। সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে কার্যত ‘গোস্ট’ মোডে চলে যায় প্রতারক।
সব হারিয়ে থানার দ্বারস্থ হন প্রতারিতরা, কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অনেকটা পরে। লালবাজার সূত্রে খবর, এমন ঘটনা ক্রমশ বাড়ছে। তাই নেটিজ়েনদের বর্তমান ‘ক্রেজ়’ যে স্বল্পদৈর্ঘ্যের ভিডিয়ো অর্থাৎ রিল বা শর্টস, সেই মাধ্যমকে কাজে লাগিয়েই সচেতনতার কাজে নামতে চায় পুলিশ। কিছুদিনের মধ্যেই কলকাতা পুলিশের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলিতে এগুলি দেখা যাবে।
জয়েন্ট সিপি (ক্রাইম) রূপেশ কুমার বলছেন, ‘এই ধরনের সাইবার ক্রাইম বিভিন্ন সময়ে নিজের প্যার্টান পরিবর্তন করে মানুষকে প্রতারণার শিকার বানায়। কলকাতা পুলিশের তরফে এই প্রথম এই বিষয়ে ‘রিলস’–এর মাধ্যমে জনসচেতনতার প্রচার করা হবে। একটি সংস্থার সঙ্গে কথা বলে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। রিলগুলি ৬৬ সেকেন্ড দৈর্ঘ্যের হতে পারে।’
ইতিমধ্যে ‘সাইবার স্মার্ট সিটিজেন কমিকস’ চালু রয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, সেখানে যেমন এআই ইমেজ দিয়ে স্টিল ছবির কমিসকের মাধ্যমে সচেতনতার কাজ চলছে, তেমনি এই প্রথম এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে অডিয়ো–ভিস্যুয়াল মাধ্যমেও সাইবার ক্রাইমের বিরুদ্ধে প্রচার চলবে। কেন এই ভাবনা মাথায় এলো? পুলিশ সূত্রে খবর, আজকাল কেউ বড় ভিডিয়ো দেখেন না। খেতে বসতে ঘুমোতে মোবাইলে সবাই বুঁদ ‘রিলস’–এ। তাই এমন ভিডিয়ো বানালে মানুষের মধ্যে তার প্রভাব অনেক বেশি হবে। সাইবার ক্রাইম থেকে নিজেদের বাঁচাতে পারবেন নেটিজ়েনরা।