• কেষ্টর পাশে দাঁড়িয়ে পুলিশকে বেলাগাম আক্রমণ! বীরভূমের জেলা সভাপতিকে সাসপেন্ড করল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ
    আনন্দবাজার | ০২ জুন ২০২৫
  • ফোনে পুলিশ আধিকারিককে কুরুচিকর ভাষায় আক্রমণের ঘটনায় অনুব্রতর পাশে দাঁড়িয়ে বোলপুর থানার আইসিকেই আক্রমণ করলেন বীরভূম জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি বিক্রমজিৎ সাউ। তার জেরে জেলা সভাপতি পদ থেকে সরানোর পাশাপাশি বিক্রমজিৎকে দল থেকেও নিলম্বিত (সাসপেন্ড) করার ঘোষণা করলেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য।

    সম্প্রতি বোলপুর থানার আইসি লিটন হালদারের সঙ্গে বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের একটি মোবাইল-কথোপকথন প্রকাশ্যে আসে। ফোনে কুরুচিকর ভাষায় লিটনকে আক্রমণ করতে শোনা যায় বীরভূম জেলা তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে। প্রথমে অনুব্রত তা অস্বীকার করলেও পরে দলের রাজ্য সভাপতিকে লেখা চিঠিতে তা কার্যত স্বীকার করে নেন। এ দিকে লিটনকে আক্রমণ করে জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি বিক্রমজিৎ সাউয়ের ভিডিয়ো রবিবার সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তার জেরে অস্বস্তিতে পড়ে শাসকদলের ছাত্রশাখা। সন্ধ্যার মধ্যেই বিক্রমজিৎকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

    বিক্রমজিতের যে ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে, তাতে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘এই আইসি দুর্নীতিগ্রস্ত। বোলপুর থানার আইসি প্রত্যেক বালি ও পাথর মাফিয়ার সঙ্গে যোগসূত্র বজায় রেখে কাজ করে। এই লিটন হালদার অনুব্রত মণ্ডল নামক ব্র্যান্ডকে দমানোর চেষ্টা করছে। লিটন হালদারের দম থাকলে, বুকের পাটা থাকলে সত্যি কথাটা জানাও। বালিঘাট থেকে বোলপুরের সাধারণ মানুষকে নিয়ে যে ছিনিমিনি খেলেছ, তুমি অনুব্রত নামক শক্তিকে নিজের অপকর্মের মাধ্যমে দমানোর চেষ্টা করেছ। তোমার অপকর্মে অনুব্রতর শক্তি দমে না।’’ তাঁকে আরও বলতে শোনা যায়, ‘‘এডিটিং করে ভয়েস তুলে আনার, এডিটিং করে সেই ভয়েস মার্কেটে দেওয়ার চেষ্টা করেছ। লিটন হালদার, তোমাকে চ্যালেঞ্জ করলাম। তুমি আইসি, সরকারি কর্মী। আমি কোনও অন্যায় করে থাকলে শাস্তি দিয়ো।’’

    বিক্রমজিৎকে পাঠানো চিঠিতে লেখা হয়েছে ‘‘ তৃণমূল ছাত্র পরিষদ থেকে আপনাকে ছয় বছরের জন্য সাসপেন্ড করা হল। সম্প্রতি সমাজমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিয়োয় যে বার্তাটি প্রকাশ পেয়েছে, তা সংগঠনের মতাদর্শের পরিপন্থী, সংগঠন বিরোধীও বটে।’’ প্রসঙ্গত বীরভূমের রাজনীতিতে বিক্রমজিৎ অনুব্রতের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। তৃণমূলের অন্দরমহলে কান পাতলে শোন যায়, অনুব্রতর সুপারিশেই তাঁকে ছাত্র সংগঠনের সভাপতি পদ দেওয়া হয়েছিল। বীরভূম জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র তথা সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এখানে রাজ্য ইউনিট যখন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তখন তাকে মান্যতা দিতেই হবে। তবে কেন এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তা বিষয়টি জানার পরেই বলতে পারব।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)