তৃতীয়বার নাবালিকার সঙ্গে গাঁটছড়া, ‘গুণধর’ জামাইয়ের খোঁজে পুলিস
বর্তমান | ০২ জুন ২০২৫
সংবাদদাতা, বোলপুর: জামাইষষ্ঠী মানে জামাইয়ের স্পেশাল খাতির। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত রাজকীয় খাবারে অ্যাপায়ন। কিন্তু বোলপুরে এক জামাইকে খাতিরের বদলে শ্রীঘরে দেখতে চান তাঁর তিন স্ত্রী-ই। কারণ, গুণধর সেই জামাইয়ের তিন-তিনটে বিয়ে। তৃতীয় স্ত্রী আবার নাবালিকা। প্রথম পক্ষের স্ত্রী এখন আর যোগাযোগ রাখেন না। তবে, দ্বিতীয়পক্ষ ও নাবালিকার পরিবার গুণধর জামাইকে পুলিসের হাতে তুলে দিতে আদা জল খেয়ে নেমেছেন তারা। যদিও দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীর পরিবারের অভিযোগ, প্রতারক জামাই বোলপুরে ঘোরাঘুরি করলেও পুলিস তাকে ধরতে গড়িমসি করছে। পুলিসের দাবি, খুব শীঘ্রই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হবে।
বোলপুর-শ্রীনিকেতন ব্লকের সিয়ান-মুলুক পঞ্চায়েতের তাতারপুর কলোনি এলাকায় বাড়ি ওই গুণধর জামাই তন্ময় মজুমদারের। সে একটি পিউরিফাইড ওয়াটার কোম্পানির বোতলজাত জল জায়গায় জায়গায় পৌঁছে দেওয়ার কাজ করে। প্রায় ১৪ বছর আগে মণিপুরী মেয়ে পিয়াইনু চানু চোনথামের সঙ্গে বিয়ে হয় তন্ময়ের। শান্তিনিকেতন সংলগ্ন লালবাঁধ এলাকায় পিয়াইনুর বাড়ি। তাদের ১২ বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। দু’জনের মধ্যে এখনও আইনত বিচ্ছেদ হয়নি। অথচ, তার মধ্যেই বোলপুর পুরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের অন্নদাপল্লির বাসিন্দা মামণি দাসকে ২০১৬ সালে বিয়ে করেন তন্ময়। মামণি ও তন্ময়ের একটি চার বছরের মেয়েও রয়েছে। কিন্তু সেখানেই না থেমে মামণির প্রতিবেশী মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী এক নাবালিকার প্রেমে ফের হাবুডুবু খেতে শুরু করে তন্ময়। দু’বছর ধরে চলে তাদের প্রেম। বিষয়টি জানতে পেরে মামণির পরিবারের সঙ্গে ওই নাবালিকার পরিবারের অশান্তিও হয়। তার পর হঠাৎই এক মাস আগে ওই নাবালিকাকে বিয়ে করে বেপাত্তা হয়ে যায় তন্ময়। নাবালিকার পরিবার বোলপুর থানায় অভিযোগ জানান। এই ঘটনায় মামণিও বোলপুর থানার দ্বারস্থ হন। কিন্তু অভিযোগ, আইসি লিটন হালদার তাঁদের জানান নাবালিকার পরিবার ইতিমধ্যেই অভিযোগ দায়ের করেছে। আর অভিযোগ করার প্রয়োজন নেই। পুলিসি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে মামণি বোলপুর কোর্টের দ্বারস্থ হন। এর পরপরই পুলিস অভিযান চালিয়ে ওই নাবালিকাকে উদ্ধার করে শান্তিনিকেতনের একটি পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠায়। তবে, তন্ময় চম্পট দেওয়ায় পুলিস তাকে ধরতে পারেনি। যদিও মামণির অভিযোগ, তন্ময় বোলপুরের আশেপাশেই ঘোরাফেরা করছে। অথচ, পুলিস তাকে ধরছে না। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনায় পুলিসের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যদিও বোলপুর থানার এক পুলিস আধিকারিক বলেন, খুব শীঘ্রই ওই ধূর্ত ও প্রতারক জামাইকে গ্রেপ্তার করে শ্রীঘরে পাঠানো হবে।