‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে বলতে গিয়ে আপত্তিকর সাম্প্রদায়িক পোস্ট। বিতর্ক শুরু হতেই গ্রেপ্তার কলকাতা নিবাসী সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার শর্মিষ্ঠা পানোলি। ১৫ মে পানোলির বিরুদ্ধে গার্ডেনরিচ থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। হরিয়ানার গুরুগ্রাম থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। শর্মিলা পানোলির গ্রেপ্তারি নিয়ে রাজ্য তো বটেই জাতীয় স্তরেও শুরু হয় চর্চা। কে এই শর্মিষ্ঠা পানোলি? যাঁর একটি পোস্ট ঘিরে এত হইচই।
কলকাতার আনন্দপুর এলাকার বাসিন্দা শর্মিষ্ঠা। পুনের সিম্বিওসিস ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির আইনের ছাত্রী তিনি। পড়াশোনার পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়ায় দীর্ঘদিন ধরেই সক্রিয় রয়েছেন। বর্তমানে X-এ প্রায় ৮৫,০০০ এবং ইনস্টাগ্রামে ৯০,০০০ ফলোয়ার রয়েছে শর্মিষ্ঠার। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সমাজমাধ্যমে ভিডিয়ো বা নিজের বক্তব্য শেয়ার করেন পানোলি।
সম্প্রতি অপারেশন সিঁদুর নিয়ে তাঁর কিছু বক্তব্যে ঝড় ওঠে সমাজমাধ্যমে। অপারেশন সিঁদুর সম্পর্কে হিন্দি চলচ্চিত্র অভিনেতাদের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ওই পোস্টে। পাশাপাশি তাঁর বক্তব্যের কিছু অংশে ধর্মীয় উস্কানিমূলক বক্তব্য ছিল বলেও দাবি। যদিও ওই পোস্টটি সমাজমাধ্যম থেকে মুছে দিয়েছেন তিনি।
পানোলির পোস্টের পরেই সমাজমাধ্যমে তাঁর বিরুদ্ধে একের পর এক হুঁশিয়ারি দেওয়া শুরু হয়। তাঁর মন্তব্যের বিরোধিতা করেন অনেকেই। ঘৃণামূলক বক্তব্য প্রচারের অভিযোগ তুলে সেটিকে ডিলিট করে দেওয়ার জন্যেও বলেন অনেকে।
পোস্টটি নিয়ে বিতর্ক হওয়ার পরেই সেটি মুছে দিয়ে শর্মিষ্ঠা লেখেন, ‘আমি সকলের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করছি। যা কিছু পোস্ট করা হয়েছে তা আমার ব্যক্তিগত অনুভূতি এবং আমি কখনই ইচ্ছাকৃতভাবে কাউকে আঘাত করতে চাইনি। আমার বক্তব্যে যদি কেউ আঘাত পেয়ে থাকেন, তা হলে আমি তার জন্য দুঃখিত। সকলের কাছে এই বিষয়ে সহযোগিতা আশা করি। আমি আমার পাবলিক পোস্ট নিয়ে এর পর থেকে সতর্ক থাকব। আবারও বলছি, দয়া করে আমার ক্ষমা করে দিন।’
ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১৯৬-এর ১-এর এ, ২৯৯, ৩৫২, ৩৫৩-এর ১-এর ৩ ধারায় শর্মিষ্ঠার বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়েছে। কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে, বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে শত্রুতা বৃদ্ধি, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার উদ্দেশ্যে বিদ্বেষপূর্ণ কাজ, শান্তি ভঙ্গের জন্য উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য পানোলির বিরুদ্ধে মামলার দায়ের হয়েছে। ১৫ মে অভিযোগ দায়ের হওয়ার পরেই আনন্দপুরের বাড়িতে হানা দেয় পুলিশ। সেখানে শর্মিষ্ঠা ও তাঁর মাকে পাওয়া যায়নি। শর্মিষ্ঠার বিরুদ্ধে জারি হয়েছিল গ্রেপ্তারি পরোয়ানা। শনিবার শর্মিষ্ঠাকে হরিয়ানা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
শর্মিষ্ঠার গ্রেপ্তারির বিরোধিতা করে পাশে দাঁড়িয়েছেন বিজেপি নেতৃত্বের একাংশ। বিজেপি সাংসদ কঙ্গনা রনৌত বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলার নামে কাউকে হয়রানি করা ভালো নয়। যখন কেউ ক্ষমা চেয়ে পোস্ট মুছে ফেলেন, তার পরেও তাঁকে গ্রেপ্তার করা, নির্যাতন করা, তাঁর ক্যারিয়ার নষ্ট করা, এটা মেনে নেওয়া যায় না। কোনও মেয়ের সঙ্গে এরকম হওয়া উচিত নয়।’