অনাবাসী ভারতীয় কোটায় বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি দুর্নীতির মামলায় ১২ কোটি ৩৩ লক্ষ টাকার ব্যাঙ্ক আমানত বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে ইডি সূত্রের দাবি। দু’জন ব্যক্তির ও চারটি মেডিক্যাল কলেজের ব্যাঙ্ক আমানত বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলেও তদন্তকারী সংস্থা সূত্রের খবর।
তদন্তকারীরা জানান, এ রাজ্যের প্রায় ১৮টি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও তার কর্তাব্যক্তিদের বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালানো হয়েছে। এর মধ্যে কলকাতা এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায় চারটি মেডিক্যাল কলেজেই গত ন’বছরে জাল নথি দিয়ে অনাবাসী ভারতীয় কোটায় সব থেকে বেশি ছাত্র ভর্তি করা হয়েছে বলে তদন্তে উঠে এসেছে। তদন্তকারীদের দাবি, অনাবাসী কোটায় জাল নথির মাধ্যমে কয়েক জনকে তিন থেকে চার কোটি টাকার বিনিময়েও এমবিবিএসে ভর্তির ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এখনও পর্যন্ত ২৩ কোটি ৬৭ লক্ষ টাকার দুর্নীতির তথ্যপ্রমাণ মিলেছে বলে তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি।
তদন্তে প্রকাশ, দুর্নীতির কালো টাকা বেশ কিছু মেডিক্যাল কলেজের কর্তা বা ভর্তি সংক্রান্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকদের নামে, বেনামে ব্যাঙ্কে জমা দেওয়া হয়েছিল। আপাতত তা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে দাবি। তা ছাড়া, ওই সব মেডিক্যাল কলেজের কর্তা এবং আধিকারিকদের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়দের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেও জালিয়াতির টাকা জমা হয়েছে বলে আরও সূত্র পাওয়া যাচ্ছে। এবং তা খতিয়েও দেখছেন তদন্তকারীরা।
তদন্তকারীদের দাবি, মূলত আমেরিকার অনাবাসী ভারতীয়দের নামে জাল নথি তৈরি করা হয়েছিল। অনাবাসী কোটায় ভর্তির জাল নথি যাচাই করে দেশের বিদেশ মন্ত্রকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি। তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি, যে-সব অনাবাসী ভারতীয়ের নামে জাল নথি তৈরি করা হয়েছিল তাঁদের সঙ্গেও যোগাযোগের চেষ্টা করা হচ্ছে। তদন্তে প্রকাশ, বিভিন্ন এজেন্ট মারফত লক্ষাধিক টাকার বিনিময়ে ওই সব জাল নথি তৈরি করা হয়। তল্লাশি অভিযানে বিভিন্ন এজেন্টের কাছ থেকে নকল সিলমোহর-সহ জাল নথি তৈরির নানা সরঞ্জাম উদ্ধার হয়েছে বলেও দাবি তদন্তকারীদের। ইডি সূত্রে দাবি, জাল নথির মাধ্যমে অনাবাসী কোটায় প্রথমে এমবিবিএসে এবং তার পরে একই কোটায় এমডি বা ডাক্তারির অন্য উচ্চ পাঠ্যক্রমে ভর্তি করা হত। তাতেও মোটা টাকার লেনদেন হয়েছে বলে তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি।
পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও দুর্নীতির জাল ওড়িশার কিছু বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজেও ছড়িয়ে রয়েছে বলে দাবি তদন্তকারীদের। সম্প্রতি ওই রাজ্যের চারটির বেশি মেডিক্যাল কলেজে তল্লাশি চালিয়ে অনাবাসী ভারতীয় কোটায় দুর্নীতির মাধ্যমে ভর্তির হদিস মিলেছে বলে তথ্য উঠে এসেছে। ওই সব মেডিক্যাল কলেজের কর্তা এবং ভর্তি সংক্রান্ত আধিকারিকদের বাড়িতে তল্লাশি অভিযান, জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়েছে।