• ‘ওজনে’ চাপা তৃণমূলের পুর-মুখবদল পরিকল্পনা
    আনন্দবাজার | ০১ জুন ২০২৫
  • তিন-চারটি ‘ওজনদার’ নামেই ফের জট পাকছে তৃণমূল কংগ্রেসের রদবদল প্রক্রিয়ায়।

    সাংগঠনিক স্তরে রদবদল প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেলেও পুরসভা ও কর্পোরেশনের মতো স্থানীয় প্রশাসনে মুখ বদলের প্রক্রিয়া নিয়ে নতুন করে টানাপড়েন শুরু হয়েছে রাজ্যের শাসক দলের অন্দরে। দলীয় সূত্রে খবর, দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বিদেশ থেকে ফিরলে সংগঠনের নীচের দিকের রদবদলের পাশাপাশি পুরসভা ও পুর-নিগমের এই ‘জট’ কাটাতে ফের উদ্যোগ শুরু হতে পারে। তবে অভিষেক ‘পারফরম্যান্সে’র যে সমীকরণে এই রদবদল চেয়েছিলেন, তাতে এমন কয়েক জনের ‘বাদ’ পড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, যা নিয়েই এই জট তৈরি হয়েছে।

    বিধানসভা ভোটের লক্ষ্যে দলের জেলা স্তরের নেতৃত্বে বড় রকমের বদল করেছে তৃণমূল। এ বার প্রায় পাঁচশো ব্লক ও শহর সভাপতির ভাগ্য নির্ধারণের কথা। দলীয় সূত্রে খবর, আগামী সপ্তাহ থেকেই সেই কাজ শুরু করছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। শেষ লোকসভা ভোটে দলের ফলাফলের ভিত্তিতে ব্লক ও শহর সভাপতি পদে বদলের সম্ভাবনাও অনেক। তবে নবনির্বাচিত জেলা সভাপতি ও চেয়ারপার্সনদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতেই নীচের তলায় এই বদলের কাজ সারতে চাইছে তৃণমূল। সে ক্ষেত্রে ভোটের ফলের পাশাপাশি স্থানীয় রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করেই ভোটের সংগঠন তৈরি করার ব্যাপারে নেতৃত্বে সহমত তৈরি হয়েছে।

    রাজ্যের শহর এলাকায় জনসমর্থন হারানোর প্রবণতায় পুর-প্রশাসনে মুখবদলের সিদ্ধান্তও নিয়েছিল তৃণমূল। দলের ঘোষণা মতো সাংগঠনিক রদবদলের সঙ্গেই সেই কাজে হাত দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অভ্যন্তরীণ টানাপড়েনের ফলে পিছিয়ে যাওয়া সাংগঠনিক রদবদলের মতোই পুর-প্রশাসনে নতুন মুখ তুলে ধরার প্রক্রিয়াও পিছিয়ে গিয়েছে। সেই সঙ্গেই এই রকম বেশ কয়েক জন পুরনো ও ওজনদার মুখ বদলের সম্ভাবনা প্রশাসনের ‘সংস্কার’-এ বাধা হয়ে রয়েছে। দলের এক নেতার কথায়, “উত্তর থেকে দক্ষিণবঙ্গ, একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পুরনেতা রয়েছেন, যাঁদের ভোটের ‘পারফরম্যান্স’ ভাল নয়। কিন্তু সকলকে বাদ দিতে গেলে কী পরিস্থিতি তৈরি হবে, তা নিয়ে নিশ্চিত না-হয়ে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ করা কঠিন।” তবে এই ওজনদার নেতাদের কারণে প্রায় ৭০-৮০টি পুরসভায় দলের সিদ্ধান্ত কার্যকর করা না গেলে, তা-ও দলের জন্য ইতিবাচক হবে না বলেই মনে করছেন তাঁরা।

    জেলা স্তরে দলের মহিলা ও শ্রমিক সংগঠনেও রদবদল শুরু করেছে তৃণমূল। তবে যুব ও ছাত্র সংগঠনে রাজ্য স্তরে মুখবদলের বিষয়টিও দলের অন্দরে আলোচনা হয়েছে। কলেজ- বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় এক দশক ছাত্র সংসদের নির্বাচন বন্ধ থাকায় ছাত্র সংগঠনে সে ভাবে নতুন মুখ উঠে আসেনি। একই ভাবে বিভিন্ন সময় দলের প্রয়োজন সত্ত্বেও রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে নেতৃত্বের সুনজরে নেই যুব সংগঠনও। দু’টি সংগঠনের জন্যই বেশ কয়েক জনের নাম ভাবা হয়েছে। বিদেশে সংসদীয় দলের সফর সেরে অভিষেক দেশে ফেরার পরেই পুর- প্রশাসন ও ছাত্র-যুব নেতৃত্ব নিয়ে কথা শুরু হবে বলে জানা গিয়েছে। এবং দল এই দু’টি ক্ষেত্রেই মমতার সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছে।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)