• কেন্দ্রের নীতির জেরে সহজে বাংলাদেশি নাগরিকের হাতে পৌঁছেছিল লার্নিং ড্রাইভিং লাইসেন্স, মত পরিবহণ দফতরের
    আনন্দবাজার | ০১ জুন ২০২৫
  • বাংলাদেশি আজ়াদ শেখ ভুয়ো নথি জমা দিয়েই পরিবহণ দফতর থেকে ড্রাইভিং লাইসেন্স হাতে পেয়েছিল। এমন তথ্য প্রকাশ্যে আসার পরেই নড়েচড়ে বসেছে পরিবহণ দফতর। গত ১৮ মে সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ ওই অনুপ্রবেশকারী কলকাতার সদানন্দ রোডে গাড়ি নিয়ে ধাক্কা মারেন নেতাজিনগর থানার এএসআই সুষেণ দাসকে। এই ঘটনায় অভিযুক্ত আজ়াদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়। তার ভিত্তিতেই তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানতে পেরেছিল, বছর একচল্লিশের ওই ব্যক্তি উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বাসিন্দা। কিন্তু তাঁর কিছু নথি খতিয়ে দেখে সন্দেহ হয় পুলিশের। দেখা যায় অধিকাংশ নথিই জাল। পুলিশের কাছে দেওয়া বয়ানেও মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন তিনি। পরবর্তী পুলিশি তদন্তে উঠে আসে যে, ওই ব্যক্তি আদতে বাংলাদেশের নাগরিক।

    তদন্তে নেমে পরিবহণ দফতরের কর্তারা জানতে পারেন, প্রথমে ‘লার্নিং ড্রাইভিং লাইসেন্স’ পেতে অনলাইনে আবেদন করেছিল আজ়াদ। অনলাইনেই মৌখিক পরীক্ষা দেওয়ার পর, অনলাইনেই যাচাই হয় আধার সংক্রান্ত যাবতীয় নথি। সেই ভিত্তিতেই ‘লার্নিং ড্রাইভিং লাইসেন্স’-ও পান। লার্নিং লাইসেন্সের ভিত্তিতেই কসবা আরটিও অফিসে আবেদন করে নতুন গাড়ি চালানোর লাইসেন্স পেয়ে যান ওই অনুপ্রবেশকারী। পরিবহণ দফতরের একাংশের দাবি, আগে ‘লার্নিং ড্রাইভিং লাইসেন্স’ পাওয়ার ক্ষেত্রে আরটিও-তে হাজিরা বাধ্যতামূলক ছিল। কিন্তু কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদীর সরকার ক্ষমতায় আসার পর সেই নিয়মে বদল আনে পরিবহণ মন্ত্রক। নিয়ম করা হয়, ‘লার্নিং ড্রাইভিং লাইসেন্স’ পেতে হলে অনলাইনে আবেদনের পাশাপাশি, পরীক্ষাও অনলাইনে দিলেই চলবে। সেই নিয়মকে হাতিয়ার করেই প্রথমে ‘লার্নিং ড্রাইভিং লাইসেন্স’ পান ওই বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী।

    তবে ‘লার্নিং ড্রাইভিং লাইসেন্স’ পাওয়ার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় পরিবহণ মন্ত্রকের নিয়মকে দায়ী করলেও, তথ্য ও নথি যাচাই এবং কসবা আরটিওতে এসে বৈধ লাইসেন্স পাওয়ার ক্ষেত্রে যে পরিবহণ দফতরেরও গাফিলতি রয়েছে, তা নিয়ে বেজায় অস্বস্তিতে পড়েছে পরিবহণ দফতর। তাই তথ্য ও নথি যাচাই নিয়ে নতুন কোনও প্রযুক্তি পরিবহণ দফতরে অন্তর্ভুক্ত করা যায় কি না, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে পরিবহণ দফতরে। তবে এ বিষয়ে এখনই প্রকাশ্যে কিছু জানাতে নারাজ পরিবহণ দফতরের আধিকারিকেরা।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)