এ বারের জামাইষষ্ঠীতে বাংলাদেশের নদী থেকে সদ্য ধরা কাঁচা ইলিশের জোগান নেই। যেটুকু আছে, তা হল, মাস দুই-তিন আগের বরফের বাংলাদেশি ইলিশ। টাটকা কাঁচা ইলিশ বলতে যা পাওয়া যাচ্ছে, তা মায়ানমারের ইলিশ। তবে দাম আকাশছোঁয়া। তাই আজ, রবিবার জামাইদের পাতে ইলিশ দিতে গিয়ে শ্বশুর-শাশুড়িদের এ বার নাজেহাল অবস্থা।
এখন চলছে মাছের প্রজননের সময়। তাই এ রাজ্যে এখন সমুদ্রে বা মোহনায় গিয়ে মাছ ধরা নিষেধ। মানিকতলা বাজারের মাছ বিক্রেতা প্রদীপ মণ্ডল শনিবার বললেন, ‘‘এ রাজ্যের নদীতে সমুদ্রের ইলিশ এখন মিলবে না। গত বারও বাংলাদেশের টাটকা ইলিশ জামাইষষ্ঠীতে এসেছিল। শ্বশুর-শাশুড়িরা জামাইয়ের পাতে সেই ইলিশ তুলে দিতে পেরেছিলেন। এ বার বাংলাদেশের ইলিশ বলে যা বিক্রি হচ্ছে, তা কিন্তু দু’-তিন মাস আগে ধরা হিমঘরের ইলিশ। বাংলাদেশে বর্তমানে যে অস্থিরতা চলছে, তার জন্য টাটকা ইলিশ কিছুই আসেনি।’’
‘ফিশ ইমপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন’-এর সভাপতি অতুল দাস বললেন, “বাংলাদেশের টাটকা ইলিশ না থাকলেও মায়ানমারের টাটকা ইলিশ বাজারে এসেছে। এক থেকে দু’কেজির ইলিশের দাম এক থেকে দু’হাজার টাকার মধ্যে। স্বাদও ভাল। অনেকেই জামাইদের ওই ইলিশ খাওয়াচ্ছেন।” শহরের বিভিন্ন বাজারের মাছ বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, দেড় কেজি ওজনের ইলিশের দাম ১৬০০ থেকে ১৮০০ টাকা। এক কেজি থেকে এক কেজি ৪০০ গ্রাম ইলিশের দাম ১৪০০ টাকার মতো। এক কেজির নীচে হলে হাজার টাকার আশপাশে। ইলিশের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে বাগদা চিংড়ির দামও। এক কেজি বাগদার দাম ১২০০ টাকা। এ ছাড়া, পমফ্রেট ৮৫০, তোপসে এক হাজার এবং ভেটকি ৬০০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ফলের বাজারেও আগুন দাম। তবে, হিমসাগর আমের দাম এ বার কিছুটা কম, ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি। লিচুর দাম ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। জামের দাম ৩০০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে ঘোরাঘুরি করছে। তবে বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, জামাইষষ্ঠী বলে বাজারে যে মারাত্মক ভিড় হচ্ছে, তা কিন্তু নয়। কারণ, আজকাল অনেকেই রান্নাবান্নার ঝামেলা না করে জামাইদের পছন্দের রেস্তরাঁয় নিয়ে গিয়ে খাইয়ে দেন।
যদিও মানিকতলা বাজারে জামাইয়ের জন্য বাজার করতে আসা এক মহিলা বললেন, ‘‘রেস্তরাঁয় নয়, জামাইকে পাত পেড়ে খাওয়াতে চাই। তাই ইলিশের দাম বেশি হলেও মানিব্যাগ খালি করে সেটাই নিয়েছি।’’