• জামাই মিষ্টি ছুঁয়েও দেখেন না! শেষপাতে থাক ঝাল রসগোল্লা
    এই সময় | ০১ জুন ২০২৫
  • সমীর মণ্ডল, মেদিনীপুর

    বাবাজীবন বেশ স্বাস্থ্য সচেতন। মিষ্টি ছুঁয়েও দেখেন না। চিন্তিত মুখে শ্বশুরমশাই বিড়বিড় করছিলেন, 'তা হলে উপায়?' গজগজ করতে করতে শাশুড়ি বললেন, 'সারাটা জীবন তো আমিই উপায় বাতলে গেলাম। এ বার তুমিও একটু মাথাটা খাটাও!'

    নাহ্, শ্বশুরমশাইকে আর মাথা খাটাতে হয়নি। শাশুড়িও গলে জল। মুশকিল আসান করে দিয়েছে 'ঝাল রসগোল্লা'। রসগোল্লা আবার ঝাল হয় নাকি? মিষ্টি বিক্রেতা অরিন্দম সাউ বলছেন, 'আলবাত হয়। রসে টইটম্বুর। দেখতেও হুবহু এক। কিন্তু স্বাদে ঝাল!'

    এ বারে জামাইষষ্ঠীর বাজারে হটকেক সেই ঝাল রসগোল্লা। জামাইষষ্ঠী উপলক্ষে মেদিনীপুরের ওই মিষ্টির দোকানে ঝাল রসগোল্লা কেনার হিড়িক পড়ে গিয়েছে। পিছিয়ে নেই পটল-মিষ্টিও। অরিন্দমের কথায়, 'মানুষ এখন সব সময়ে নতুন কিছু খোঁজে। তাই সাদা, কেশর, আম, সুগার-ফ্রি রসগোল্লার পাশাপাশি এ বার তৈরি করলাম ঝাল রসগোল্লা। সামান্য চিনি, সঙ্গে কাঁচা লঙ্কার ছোঁয়া। দারুণ সাড়াও পাচ্ছি। প্রতি পিসের দাম ১৫ টাকা।' হাওড়ার বাসন্তী রায় বলেন, 'ডিসেম্বরে আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়ে প্রথম ওই ঝাল রসগোল্লা খাই। এ স্বাদ সত্যিই স্বতন্ত্র।'

    মেদিনীপুর মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সুকুমার দে বলেন, 'রসগোল্লা এখন শুধুই মিষ্টি নয়, একটা আবেগও। জিআই ট্যাগ পাওয়ার পরে তার গৌরব আরও বেড়েছে।'

    ঝাল রসগোল্লার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চাহিদা বেড়েছে পটল মিষ্টিরও। মেদিনীপুর শহরের একটি দোকানে এই পটল মিষ্টি কিনতে ভিড় করছেন অনেকেই। পটলের খোসা ছাড়িয়ে তা সেদ্ধ করে সন্দেশের মিশ্রণ ভরা হচ্ছে ভিতরে। তারপরে সেটি চিনির রসে ফোটানো হচ্ছে। দেখতে অনেকটা সবুজ মোরব্বার মতো, কিন্তু স্বাদে সম্পূর্ণ নতুন। সদ্য বিবাহিত নির্মাল্য ঘোষের কথায়, 'ঝাল রসগোল্লা আর পটল মিষ্টি নিয়েই শ্বশুরবাড়ি যাব।' সুরেশ দাস বলছেন, 'আমার জামাইরা মিষ্টি পছন্দ করে না। তাই ভাবলাম, এমন কিছু নিই যা স্বাদে নতুন, আবার নামেও মিষ্টি। তাই ঝাল রসগোল্লাই কিনলাম। তেমন সুগার তো নেই। ফলে ভয় নেই সুগারেরও।'

  • Link to this news (এই সময়)