বোলপুরের আইসিকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজের ভিডিয়ো ভাইরাল হওয়ার পর থেকেই দলের কড়া নজরে অনুব্রত মণ্ডল। দলের চাপে প্রকাশ্যে লিখিত ভাবে ক্ষমাও চাইতে হয়েছে বীরভূমের এই দাপুটে নেতাকে। এমনকী ক্ষমাপ্রার্থনা করে ভিডিয়ো বার্তাও দেন তিনি। জানান, ঘুমের আগে ওষুধ খান। সেই ওষুধের রেশেই এ সব বলে ফেলেছেন। এ দিকে সেই ক্ষমা চাওয়ার ভিডিয়ো সামনে আসার ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই নয়া দাবি অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ দেবব্রত সরকার ওরফে গগন সরকারের গলায়। অনুব্রতর ছায়াসঙ্গী গগনের দাবি, যে মন্তব্য নিয়ে এত শোরগোল, তা আসলে অনুব্রতর নয়, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা AI-এর কারিকুরি।
বোলপুর থানার আইসিকে গালমন্দ করে দু’ দিন আগেই পুলিশের চিঠি খেয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। থানার হাজিরা দিতে বলা হয়েছে তাঁকে। যদিও শনিবার-রবিবার, পর পর দু’দিন সেই হাজিরা এড়িয়ে গিয়েছেন শরীর খারাপের কথা বলে। এমনও সূত্রের খবর, অনুব্রত মণ্ডলকে চিকিৎসক পাঁচ দিনের জন্য বেড রেস্টের পরামর্শ দিয়েছেন। সেই মেডিক্যাল সার্টিফিকেট জমা দেওয়া হয়েছে এসডিপিওর কাছে। সে কারণেই নাকি তিনি হাজিরা দিতে পারেননি।
আর এ সবের মধ্যেই রবিবার সকালে বোলপুর মহকুমা পুলিশ আধিকারিকের অফিসে এসে ‘AI ক্রিয়েটেড অডিয়ো’ তত্ত্ব তুলে ধরেন গগন। তার পরেই এই ঘটনা নিয়ে উঠছে একাধিক প্রশ্ন। যদি অডিয়োটি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি করা হয়, তা হলে তা বলতে ৭২ ঘণ্টা সময় লাগলো কেন?
যদি অনুব্রত মণ্ডল কোনও দোষ না করে থাকেন, তাহলে তিনি দলের কাছে লিখিত ভাবে ও ভিডিয়ো বার্তা দিয়ে ক্ষমা প্রার্থনাই বা করলেন কেন? তা ছাড়া, যদি এআই দিয়েই এই অডিয়ো ক্লিপ তৈরি হয়, তা অনুব্রত মণ্ডল নিজে কেন বললেন না বা ক্ষমা প্রার্থনার চিঠিতেও কেন উল্লেখ করলেন না? আর এ নিয়ে বলার জন্য এত লোক থাকতে, হঠাৎ গগন সরকারকেই বা সামনে ঠেলে দেওয়া হলো কেন?
জানা গিয়েছে, দেবব্রত সরকার ওরফে গগন এক সময় বিশ্বভারতীর তৃণমূল ইউনিটের দায়িত্ব সামলাতেন। বর্তমানে তিনি শিক্ষাবন্ধু সেলের রাজ্য সভাপতি। একই সঙ্গে অনুব্রত মণ্ডলের ছায়াসঙ্গীও। তিহাড় থেকে অনুব্রত ফিরে আসার পর থেকে, প্রায় সর্বক্ষণই অনুব্রতর সঙ্গে দেখা যায় তাঁকে। যে কোনও মিটিং মিছিলেও অনুব্রতর সঙ্গেই থাকেন তিনি। অনেকেই বলছেন, আপাতত অনুব্রতর ভরসার লোক এই গগন সরকার।
রিপোর্ট: ঋতভাষ চট্টোপাধ্যায়