বঙ্গ সফরে এলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। রবিবার দিনভর তাঁর একাধিক কর্মসূচি রয়েছে। তার আগে শনিবারই কলকাতায় এলেন শাহ। রাত ১০ টা নাগাদ তাঁর বিমান নামে কলকাতা বিমানবন্দরে। রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, লকেট চট্টোপাধ্যায়, অগ্নিমিত্রা পাল-সহ বিজেপির শীর্ষ স্থানীয় নেতৃত্বের সকলেই উপস্থিত ছিলেন। বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে কনভয় কয়েক মিনিট থামে। গাড়ি থেকে নেমে আসেন শাহ। উপস্থিত সকল বিজেপি কর্মী-সমর্থককে নিরাশ করেননি। কয়েক মুহূর্ত থেকে আবার গাড়িতে ওঠেন শাহ। তার পরে তাঁর কনভয় সোজা চলে যায় বাইপাসের ধারের এক হোটেলে। রাতে সেখানেই থাকবেন তিনি।
সারা দিন তেমন বৃষ্টি না হলেও শনিবার সন্ধ্যার পর থেকেই কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় জায়গায় বৃষ্টি শুরু হয়। কোথাও মুষলধারে, আবার কোথাও ঝিরিঝিরি বৃষ্টি। তবে সেই বৃষ্টি উপেক্ষা করেই বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা হাজির কলকাতা বিমানবন্দরে। কারও হাতে বিজেপির দলীয় পতাকা, কেউ কেউ আবার মালা নিয়েও এসেছেন। শাহকে স্বাগত জানাতে বৃষ্টি মাথায় নিয়ে বিজেপির কর্মী-সমর্থকদের উচ্ছ্বাস চোখে পড়ার মতো। লাল-সাদা শাড়ি পরিহিত মহিলা ঢাকির দলকেও দেখা গেল ভিড়ে। শাহের বিমান কলকাতা বিমানবন্দরে নামার আগে থেকেই ঢাকের কাঠি পড়েছে। নানা তাল উঠছে সেই ঢাকে। বিভিন্ন বয়সের মহিলারা সেই ঢাক বাজাচ্ছেন। তালে তাল মেলাতে কাঁসর হাতেও হাজির বেশ কয়েক জন।
রবিবার সকাল থেকেই শহরে একাধিক কর্মসূচি রয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর। নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে সাংগঠনিক জমায়েত রয়েছে। সেই সভায় থাকবেন শাহ। সাংসদ, বিধায়ক এবং রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বকে নিয়ে একটি বৈঠক করার কথা তাঁর। সেই বৈঠকে শুধু শীর্ষ স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব নয় মণ্ডল সভাপতি থেকে শুরু করে জেলা এবং রাজ্যস্তরের নেতৃত্ব থাকবেন সেখানে। বিজেপি সূত্রে খবর, যেহেতু ১০ মাসের মধ্যেই বঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন, সেই আবহে সাংগঠনিক রণকৌশল নিয়ে বার্তা দিতে পারেন শাহ।
তবে নেতাজি ইন্ডোরের কর্মসূচির আগে অবশ্য রাজাহাটের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা শাহের। সেখানে সিএফএসএলের নতুন ভবনের উদ্বোধন করবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তার পর সেখান থেকেই তাঁর কনভয় চলে যাবে নেতাজি ইন্ডোরে। সাংগঠনিক সভা শেষে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানেও যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে শাহের। সেটি আয়োজিত হবে স্বামী বিবেকানন্দের জন্মভিটেয়। কিন্তু সে কর্মসূচির উদ্দেশ্য কী, কী আলোচনা হবে— তা নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। জানা গিয়েছে, বিভিন্ন মঠ, মিশন এবং আধ্যাত্মিক সংগঠনের সাধুসন্তরা আমন্ত্রিত থাকছেন ওই অনুষ্ঠানে। রাজ্য বিজেপির নেতৃত্বও থাকবেন সেখানে। সেই অনুষ্ঠান সেরেই সন্ধ্যায় বিএসএফের বিমানে দিল্লি ফিরবেন শাহ।
পহেলগাঁও কাণ্ড, ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পর এই প্রথম বঙ্গ সফরে আসছেন শাহ। দিন দুয়েক আগেই আলিপুরদুয়ারে সভা করে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই সভা থেকে তিনি যেমন ভারতীয় সেনার সাফল্যের কথা বলেছেন, তেমনই বাংলার শাসকদল তৃণমূলকেও নিশানা করেছেন। তার ৪৮ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই বঙ্গে এলেন শাহ।