• ৯০৯ দিন ধরে জেলেই! ডাকাতিতে অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবলকে জামিন দিল না হাই কোর্ট
    আনন্দবাজার | ৩১ মে ২০২৫
  • ডাকাতির ঘটনায় অভিযুক্ত এক পুলিশ কনস্টেবলের জামিনের আর্জি খারিজ করে দিল কলকাতা হাই কোর্ট। গ্রেফতারির সময় অভিযুক্ত ওই কনস্টেবল কলকাতার একবালপুর থানায় কর্মরত ছিলেন। ৩৩ লক্ষ টাকা ডাকাতির এক মামলায় গ্রেফতার হন তিনি। হাই কোর্ট জানিয়েছে, অভিযুক্ত ওই পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে তদন্তে উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণ মিলেছে। ফলে প্রায় আড়াই বছর ধরে জেলে থাকলেও এখনই তাঁকে জামিন দেওয়ার পক্ষপাতী নয় আদালত। সব দিক বিবেচনা করে অভিযুক্তের জামিনের আর্জি খারিজ করে দিয়েছে হাই কোর্ট।

    শুক্রবার হাই কোর্টের বিচারপতি পার্থসারথি সেনের অবকাশকালীন বেঞ্চে মামলাটির শুনানি ছিল। পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে আদালত। অবকাশকালীন বেঞ্চ জানিয়েছে, নিম্ন আদালতে (আলিপুর আদালতে) বিচার প্রক্রিয়ার কাজ শুরু হয়েছে। এই অবস্থায় এখনই জামিন দেওয়া যাবে না অভিযুক্তকে। আলিপুর আদালতকে দ্রুত এই মামলায় বিচারের কাজ শেষ করার জন্যও বলেছে হাই কোর্ট।

    বস্তুত, ওই একই ঘটনায় একবালপুর থানার তৎকালীন এক সিনিয়র কনস্টেবলও গ্রেফতার হয়েছিলেন। এর আগে ওই সিনিয়র কনস্টেবলেরও জামিনের আবেদন বাতিল করে দিয়েছিল হাই কোর্ট। ওই সময়ে বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি অপূর্ব সিংহ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ ছিল, পুলিশের এমন কাজে আইনের প্রতি সাধারণ মানুষের ভরসা কমে যাবে। আইনের রক্ষকের বিরুদ্ধে যখন আইন ভাঙার এবং অপরাধ করার অভিযোগ ওঠে, তা খুবই দুঃখজনক। একজন পুলিশকর্মীর উচিত জনগণের সেবক হিসাবে কাজ করা। জনগণকে রক্ষা করবেন, এটিই তাঁর দায়িত্ব এবং কর্তব্য।

    ওই সময় আদালত আরও জানিয়েছিল, চুরি-ডাকাতি করা পুলিশের কাজ হতে পারে না। নিজের পদের অপব্যবহার করেছেন এবং সুবিধা নিয়েছেন ওই পুলিশকর্মীরা। এই ধরনের ব্যক্তিদের জামিনে মুক্ত করলে, ভবিষ্যতে তাঁরা একই কাজ করবেন না এমন কোনও নিশ্চয়তা নেই বলেও জানিয়েছিল হাই কোর্ট।

    ঘটনাটি ২০২২ সালের ২ নভেম্বরের। কলকাতার ময়ূরভঞ্জ রোডের ধারে একটি ডাকাতির ঘটনা ঘটে। অভিযোগ, সেখানে একটি হোটেলের ঘর থেকে ৩৩ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা খোয়া যায়। ওই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে একবালপুর থানার সিনিয়র কনস্টেবল এবং অপর এক কনস্টেবলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সিনিয়র কনস্টেবলের জামিনের আবেদন আগেই খারিজ হয়ে যায়। অন্য জন জামিন চেয়ে অবকাশকালীন বেঞ্চে আবেদন জানান। মামলায় ওই কনস্টেবলের বক্তব্য, ঘটনার দিন সকাল ১০টায় সিনিয়র কনস্টেবলের নির্দেশে তিনি ময়ূরভঞ্জ এলাকার ওই হোটেলে যান। ঘটনার বিষয়ে কিছু জানতেন না। সিনিয়র কনস্টেবলের কথায় হোটেল রুমের বাইরে পাহারা দিচ্ছিলেন। ৯০৯ দিন জেলে রয়েছেন, এ বার জামিন দেওয়া হোক। হাই কোর্ট সেই আবেদনে সাড়া দিল না।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)