নজরুলের বাড়িতে মিলেছিল হাতে লেখা কোরান, ১৫০ বছরের সেই ধর্মগ্রন্থ সংরক্ষণের কাজ শুরু
প্রতিদিন | ৩১ মে ২০২৫
শেখর চন্দ্র, আসানসোল: কাজী নজরুল ইসলামের চুরুলিয়ার বাড়ি থেকে পাওয়া গিয়েছিল হাতে লেখা একটি কোরান। যাঁর আনুমানিক বয়স দেড়শো বছর। সেই কোরানটি সংগ্রহের পর ডিজিটালাইজড করে সংরক্ষণ করার কাজ শুরু করল কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়। এতদিন তুলোট কাগজের উপর লেখা কোরান শরিফটি রাখা ছিল চুরুলিয়ার শহর গ্রন্থাগারে। জামুড়িয়ার প্রত্যন্ত গ্রামীণ গ্রন্থাগারে তাঁর রক্ষণাবেক্ষণ করা যথেষ্ট চ্যালেঞ্জের। তাও গ্রন্থাগার কর্তৃপক্ষ কবির পরিবারের সেই অমূল্য সম্পদটি আগলে রেখেছিল। তা চিরস্থায়ী করতে এটি ডিজিটালাইজড করা প্রয়োজন।
তাই এবার কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় এই কাজে এগিয়ে এসেছে। কোরানের সঙ্গে পাওয়া গিয়েছে একটি চিঠি। ১৯৮০ সালে যে চিঠি লিখেছিলেন কবির ভাইপো মোজাহার হোসেন। সেখানে তিনি ওই কোরান নিয়ে উল্লেখ করেছেন, তাঁদের প্রপিতামহ মুন্সি কাজী এনায়ুতুল্লা এই কোরান নিজে হাতে লেখেন। শতাধিক বছর আগে। কাজী আবু সাইদ ১৯৬৫ সাল নাগাদ তা বাঁধাই করেছিলেন। কোরানের হাতের লেখা কালো কালিতে। সংশোধন করা হয়েছে লাল কালিতে। সেই লাল কালির কলমটিও তার সঙ্গেই রয়েছে। হাতে লেখার কোরানের সংশোধন কি কবি নিজে করেছিলেন, তার উত্তর অবশ্য পাওয়া যায়নি।
জানা গিয়েছে, দেড়শো বছরের পুরনো কোরানার পাতা থেকে ধুলো পরিষ্কার করে চলছে ডিজিটালাইজেশনের কাজ। আগামী দু’তিন মাসের মধ্যে সেই কাজ সম্পন্ন করা যাবে বলে আশাপ্রকাশ করেছেন নজরুল গবেষক শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়। গবেষকদের মতে, কবি শৈশবকালে মোয়াজ্জেমের কাজ করেছেন। তাই কবির কোরান চর্চার মূল কারণ হল কবির পারিবারিক হাতের লেখা এই কোরান শরিফ। কবির পরিবার ছিল ধর্মপ্রাণ মুসলিম। পরিবার থেকেই তাঁর প্রথম আরবি শিক্ষা বলে দাবি গবেষকদের। নজরুল কোরানের যে বাংলা পদ্যনুবাদ করেছিলেন, তার অনুপ্রেরণা ছিল হাতের লেখা এই কোরানটি। এমনটাই মত তাঁদের। চুরুলিয়া-শহর গ্রন্থাগারের সভাপতি প্রদীপ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা অতি যত্নে বইটি রেখেছিলাম। এবার তা ডিজিটাল ফর্মেও প্রকাশিত হবে। বর্তমান প্রজন্মের পড়ুয়ারাও দেখতে পাবেন।’’