প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভায় ডাক পাননি দিলীপ ঘোষ। শনিবার দুপুর অবধি আমন্ত্রণ পাননি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের রবিবারের অনুষ্ঠানেও। দলের শীর্ষ দুই নেতার অনুষ্ঠানে বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি ও প্রাক্তন সাংসদের ডাক না পাওয়া নিয়ে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন মহলে চর্চা শুরু হয়েছে। অনেকেরই প্রশ্ন, তবে কি বিজেপিতে একেবারেই গুরুত্ব হারাচ্ছেন দিলীপ? প্রাক্তন সাংসদের অবশ্য বক্তব্য, কোন নেতা কোথায় যাবেন, দল তা ঠিক করে। তাঁর কাছে যে নির্দেশ আসে, তিনি তা পালন করেন মাত্র।
২৯ মে আলিপুরদুয়ারে সভা করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। সেই সভায় ডাকা হয়নি দিলীপ ঘোষকে। রবিবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে অমিত শাহের সভাতেও এখনও আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। তবে দিলীপ ঘোষকে ডাকা না হলেও, বঙ্গ বিজেপির প্রথম সারির একাধিক নেতাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলেই খবর। এমনকী রাজ্য কমিটির একাধিক সাধারণ সদস্যকেও সেখানে দেখা যেতে পারে।
কিন্তু দিলীপ ঘোষ আমন্ত্রণ পাননি কেন? দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, ‘বড় নেতাদের অনুষ্ঠানে না ডাকলে যাই না। বড় নেতাদের মানসম্মান আছে। তাঁরা যাঁদের ডাকেন, তাঁরাই যান। আমার প্রয়োজন হলে যাই। আমি সংগঠনের কাজ করি। প্রয়োজন হলে তাঁরাই ডাকেন, কী করতে হবে তাঁরা বলেন। আমরা পালন করি মাত্র।’
একই সঙ্গে দিলীপ ঘোষ জানান, যখন তিনি রাজ্য সভাপতি পদে ছিলেন, তখন গিয়েছেন, স্বাগত জানিয়েছেন। এখন কর্মীদের যে বৈঠক, সেখানে থাকবেন তিনি। কিন্তু দিলীপ এখনও বিজেপির কোর কমিটিতে আছেন। সেই সূত্র ধরেও তো শাহি-সভায় আমন্ত্রণ পাওয়ার কথা তাঁর।
দিলীপের ব্যাখ্যা, ‘রাজনীতিতে নেতার পিছন পিছন ঘোরার একটা ট্রেন্ড আছে। কারণে-অকারণে ১০০-২০০ লোক দাঁড়িয়ে থাকে সারাদিন। দেখাও করেন না নেতা। আসলে এটা একটা কালচার হয়ে গিয়েছে, তাই সকলে ভাবে এটাই ঠিক।’
তবে বঙ্গ রাজনীতির অন্দরমহলে অন্য কথাই বেশি শোনা যাচ্ছে। অক্ষয় তৃতীয়ায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিঘার জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে সস্ত্রীক হাজির ছিলেন দিলীপ ঘোষ। যা নিয়ে বিজেপির অন্দরে রীতিমতো বিদ্রোহের আগুন জ্বলে উঠেছিল। জেলায় জেলায় বিজেপি কর্মীদেরই প্রতিবাদ, বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছিল দিলীপ ঘোষকে। সেই দিলীপকে সর্বভারতীয় নেতাদের অনুষ্ঠানে ডেকে নতুন করে বঙ্গ বিজেপি কোনও ঝুঁকি নিয়ে চাইছে না বলে রাজনৈতিক মহলের অনেকেরই মত।
যদিও বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বরাবরই দিলীপ ঘোষের প্রশ্নে সংযত। এ বারও সুকান্তর জবাব, ‘দিলীপদা আমাদের পার্টির নেতা। তবে উনি শেষ ছিলেন সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি পদে। ফলে তাঁকে নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা সুকান্ত মজুমদারের নেই। সর্বভারতীয় স্তরেই সমস্ত সিদ্ধান্ত হবে।