এই সময়: শিক্ষকদের ৩৫ হাজারের বেশি পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলেও রাজ্যের স্কুলগুলোয় নন-টিচিং স্টাফদের নিয়োগের কোনও বিজ্ঞপ্তি স্কুল সার্ভিস কমিশন প্রকাশ করেনি।
যদিও এর আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্নে একটি সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছিলেন, গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি-দের নিয়োগের বিষয়টি পরে দেখে নেওয়া হবে। মুখ্যমন্ত্রীর সেই বক্তব্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই নন-টিচিংদের নিয়োগ-বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেনি এসএসসি।
কিন্তু এমনিতেই বহু বছর রাজ্যের স্কুলগুলোয় নিয়োগ হয়নি, তার উপর এক লপ্তে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি পদে নিযুক্ত সাড়ে ৮ হাজারের চাকরি চলে যাওয়ার ফলে অনেক স্কুলেই এখন ঘণ্টা দেওয়া, স্কুলের গেট খোলার লোক নেই।
প্রশ্ন উঠেছে, এই অবস্থায় দীর্ঘ অপেক্ষার পর যখন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলো, তখন তা থেকে কেন বাদ রাখা হলো শিক্ষাকর্মীদের?
দেশের শীর্ষ আদালতের রায়ের পর একযোগে আন্দোলনে নেমেছেন চাকরিহারা শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা। গত ৩ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের রায় ঘোষিত হওয়ার পর পরই মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অফিসের ভিতরে রীতিমতো অনশন শুরু করেন গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি কর্মীরা। তাঁরা করুণাময়ী মোড় অবরোধ করেন।
আন্দোলনের তীব্রতা এতটাই ছিল যে, তাঁদের সঙ্গে নবান্নে আলোচনায় বসেন মুখ্যসচিব–সহ রাজ্য প্রশাসনের শীর্কষর্তারা। সেই মিটিং চলাকালীন মুখ্যমন্ত্রী ফোনে ঘোষণা করেন, চাকরি হারানো গ্রুপ-সি শিক্ষাকর্মীদের ২৫ হাজার টাকা এবং গ্রপ ডি শিক্ষাকর্মীদের ২০ হাজার টাকা মাসিক ভাতা দেওয়া হবে শ্রম দপ্তরের তরফে। রাজ্য মন্ত্রিসভা সম্প্রতি ওই সিদ্ধান্ত অনুমোদন করার পর সেটা বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশিতও হয়েছে।
আপাতত তার কোনও উত্তর নেই এসএসসি কর্তাদের কাছেও। শিক্ষাকর্মীদের আন্দোলনের অন্যতম নেতা সুজয় সর্দার বলেন, ‘প্রথম থেকেই সরকার আমাদের বিষয়টা অবহেলা করেছে। তারা আদালত থেকেও কোনও রিলিফ আনতে পারেনি। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত না–হওয়ায় আমরা আতঙ্কে রয়েছি। কারণ, আমরা আর পরীক্ষা দিতে চাই না। নিজেদের একই যোগ্যতার প্রমাণ দু’বার দিতে চাই না।’
সুজয়ের কথায়, ‘মুখ্যমন্ত্রী নিজেই বলেছেন, উনি পরে আমাদের বিষয়টা দেখবেন। বিষয় দেখা মানে কিন্তু নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা নয়।’