এই সময়, অশোকনগর: কিডনি পাচার চক্রের তদন্তে অশোকনগর থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হলো কলকাতার নামী নেফ্রোলজি সেন্টারের দুই কর্তাকে। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে প্রায় ছ’ঘণ্টা ওই নেফ্রো কেয়ারের ম্যানেজমেন্টের কর্তাদের পুলিশ জেরা করে।
তাতে একাধিক অসঙ্গতি যেমন মিলেছে, তেমনই তদন্তকারীদের একাধিক প্রশ্নের উত্তর তাঁরা এড়িয়ে গিয়েছেন বলে পুলিশ সূত্রে খবর। ফের তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
কিডনি পাচারে ধৃত শীতল ঘোষদের সঙ্গে তাঁদের সম্পর্ক কী ছিল, কী ভাবে ওই সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল, সঙ্গে আর কার কার যোগসাজশ রয়েছে সেগুলিই এ দিন পুলিশ জানার চেষ্টা করে।
শুধু তাই নয়, এই চক্রে নজরে থাকা কলকাতা হাইকোর্টের এক আইনজীবী কেন রাতারাতি ‘নট রেকমেন্ডেড’ আবেদনকে ‘রেকমেন্ডেড’ করার দায়িত্ব নিতেন তা জানতে চান তদন্তকারীরা।
উল্লেখ্য, কিডনি দানের ক্ষেত্রে জেলা ও রাজ্যস্তরে দু’টি কমিটি রয়েছে। হাসপাতাল বা নেফ্রোলজি সেন্টার থেকে প্রাথমিক দাতা ও গ্রহীতার শারীরিক রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রথমে পুলিশ ভেরিফিকেশন হয়। তার পর মহকুমাস্তরে শুনানি হয়।
সেই রিপোর্ট ‘রেকমেন্ড’ অথবা ‘নট রেকমেন্ড’ হয়ে পাঠানো হয় রাজ্যস্তরে। পাশাপাশি, আদালত থেকে এফিডেভিট করাতে হয় দাতাকে। এ ক্ষেত্রে দাতা ও গ্রহীতার মধ্যে পূর্ব পরিচয় থাকতে হয়।
কিন্তু, ওই নেফ্রোলজি সেন্টারে কোনও কিছুই মানা হতো না বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। শুধু তাই নয়, দুই ভিন রাজ্যের দাতা-গ্রহীতার মধ্যে যোগাযোগের মাধ্যম শুধু নয়, ভিনরাজ্যের এই চক্রের মাথাও এই নেফ্রো সেন্টার ছিল বলেই মনে করছে পুলিশ।
সেন্টারের কর্তাদের জেরা করে পুলিশ জেনেছে অনেক ক্ষেত্রে দাতা এবং গ্রহীতা একে অপরকে চিনতই না। তা সত্ত্বেও শুধুমাত্র টাকার বিনিময়ে একজনের কিডনি আর একজনের শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। যা সম্পূর্ণ বেআইনি। রীতিমতো কর্মী নিয়োগ করে তাদের মাধ্যমে খদ্দের ধরে শীতলদের সঙ্গে এই গ্যাং কলকাতাতেও জাল বিস্তার করেছিল বলেও আঁচ পেয়েছেন তদন্তকারীরা।
তবে বেশ কিছুর উত্তর এখনও অধরা পুলিশের কাছে। সেগুলি জেনে তদন্তের জাল গোটাতে চাইছে অশোকনগর থানার পুলিশ।