এই সময়, কালনা: নাদনঘাটের নসরতপুরের কিশোরীগঞ্জ এলাকায় গত দু’দিন ধরে ফের শুরু হয়েছে ভাগীরথীতে ভাঙন। নদীতীরের বাসিন্দারা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। একইসঙ্গে চাষের জমিও নদীগর্ভে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
যে হারে ভাঙন শুরু হয়েছে, তাতে দ্রুত ব্যবস্থা না-নেওয়া হলে অচিরেই দু’টি গ্রাম ইতিহাসের পাতায় চলে যেতে পারে বলে মনে করছেন বাসিন্দারা।
ভাগীরথীর অন্য প্রান্তের গ্রাম কিশোরীগঞ্জ পূর্ব বর্ধমান জেলার মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন। গ্রামবাসীর পেশা চাষ এবং আর তাঁতের কাজ। বছর ২০ আগে ভাঙনের সমস্যা থাকলেও বেশ কয়েক বছর স্বস্তিতে ছিলেন তাঁরা। ফের ভাগীরথীর ভাঙন শুরু হওয়ায় রাতের ঘুম ছুটেছে বাসিন্দাদের। বর্ষা দোরগোড়ায়। তাই আতঙ্ক তাড়া করছে।
গ্রামের বাসিন্দা হারু বাগের বক্তব্য, ‘বছর কুড়ি আগে ভাঙনের খুব সমস্যা ছিল। তার পরে তেমন কিছু হয়নি। গত দু’বছর ধরে ফের ভাঙন শুরু হয়েছে। তলিয়ে গিয়েছে বেশ কিছু চাষের জমি। যে ভাবে তা এগোচ্ছে, যে কোনও মুহূর্তে ভিটেহারা হতে পারি। অনেকেরই বিঘের পর বিঘে চাষের জমি তলিয়ে গিয়েছে। ভিটেও হারিয়েছেন কেউ কেউ।’
রাস্তা ভেঙে যাওয়ার পরে সম্প্রতি সেখানে মাটি ফেলা ছাড়া ভাঙন প্রতিরোধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
আর এক বাসিন্দা বঙ্কেশ বৈরাগ্যের প্রতিক্রিয়া, ‘ভাঙন ভিটের প্রায় কাছাকাছি চলে এসেছে। রাতে আতঙ্কে ঘুমোতে পারি না। বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে যে ভাবে ভাঙন শুরু হয়েছে, তাতে দ্রুত ব্যবস্থা না-নেওয়া হলে গ্রাম নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।’
সেচ দপ্তরের লোকজন ঘুরে দেখে গেলেও ভাঙন প্রতিরোধের কোনও ব্যবস্থা হয়নি। আমরা চাই অবিলম্বে ভাঙন প্রতিরোধের কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’ গ্রামের অনেকেই একটা সময়ে তাঁতের কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, এখন তাঁদের কাজও নেই। এখন ভাঙনের চিন্তায় তাঁরাও দিশেহারা।
নসরতপুর পঞ্চায়েতের প্রধান কানন বর্মন বলেন, ‘নতুন করে ভাঙন শুরু হয়েছে। বিষয়টি বিশদে দেখে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানানো হবে।’