এই সময়: বঙ্গোপসাগরে তৈরি অতি গভীর নিম্নচাপ ক্যানিংয়ের প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূর দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ পার করে বাংলাদেশে ঢোকার পর থেকেই শক্তি হারিয়ে সাধারণ একটি নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে।
দক্ষিণবঙ্গের অন্তত ন’টি জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস জারি করেছিলেন আবহবিদরা। কিন্তু নিম্নচাপের গতিপথ কিছুটা বেঁকে যাওয়ায় এবং নিম্নচাপটির দ্রুত শক্তিক্ষয় হওয়ায় পূর্বাভাস মতো বৃষ্টি হয়নি দক্ষিণবঙ্গে।
তবে দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা ঢুকে যাওয়া শুধুই সময়ের অপেক্ষা বলে মনে করা হচ্ছে। আবহবিদদের একাংশের ধারণা, সোমবারের মধ্যেই কলকাতা–সহ দক্ষিণবঙ্গের অনেকটা এলাকায় ঢুকে পড়তে পারে দক্ষিণ–পশ্চিম মৌসুমি বায়ু।
উত্তরবঙ্গে সাধারণত বর্ষার বাতাস ঢুকতে শুরু করে জুনের ৭–৮ তারিখ থেকে। কিন্তু এ বছর তার অনেকটাই আগে, ২৯ মে দক্ষিণ–পশ্চিম মৌসুমি বাতাস প্রবেশ করেছে উত্তরবঙ্গে। বঙ্গোপসাগরে তৈরি নিম্নচাপের হাত ধরেই নির্ধারিত সময়ের এতটা আগে বর্ষার বাতাস উত্তরে ঢুকেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
ওই নিম্নচাপের সঙ্গী হয়ে বর্ষার বাতাস শুক্রবার বাংলাদেশের বেশিরভাগটাও দখল করেছে। মৌসুমি বাতাসের অগ্রগতির যে চার্ট প্রকাশ করেছে মৌসম ভবন, তাতে দেখা যাচ্ছে—বর্ষার বাতাস দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও বাংলাদেশ সীমান্তের খুব কাছেই অবস্থান করছে। এই কারণেই আবহবিদদের পর্যবেক্ষণ, দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা প্রবেশ শুধুই সময়ের অপেক্ষা।
কিন্তু একই সঙ্গে আবহবিদরা এটাও জানাচ্ছেন, দক্ষিণ–পশ্চিম মৌসুমি বাতাস যে গতিতে ২৪ মে থেকে ২৯ মে পর্যন্ত এগিয়েছিল, সেই গতি অনেকটাই কমেছে। এই প্রসঙ্গে আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ রবীন্দ্র গোয়েঙ্কা বলেন, ‘ভারতে দক্ষিণ–পশ্চিম মৌসুমি বাতাস প্রবেশের ধরন এমনটাই। বাতাসের প্রাথমিক বেগ কয়েক দিনের মধ্যেই দুর্বল হয়ে পড়ে। কিছুদিন পর ফের কিছুটা গতি পায়।’
এই কারণেই তিনি মনে করছেন, সোমবারের মধ্যে দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা না নামলে অন্তত এক সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে। বর্ষার বাতাস প্রবেশ করলেও দক্ষিণবঙ্গে আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি কাটবে না বলেই মনে করছেন আবহবিদরা। সোম থেকে পরের কয়েক দিন দক্ষিণবঙ্গে বিক্ষিপ্ত ভাবে বৃষ্টি হলেও মোটের উপরে রাজ্যের দক্ষিণভাগ শুকনোই থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে। অবশ্য এক সপ্তাহের মধ্যেই ফের বর্ষার দাপট শুরুর সম্ভাবনা।