দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: রাজ্যের পিছিয়ে পড়া এলাকাগুলির একটি ক্যানিং ২ নম্বর ব্লক। বাম আমলের লাগাতার বঞ্চনার পর উন্নয়নের সারিতে ধীরে ধীরে সামনের দিকে এগিয়ে আসছে এই এলাকা। তার জ্বলন্ত উদাহরণ জীবনতলা রোকেয়া মহাবিদ্যালয়। প্রথমবার ন্যাকের মূল্যায়ণে ‘বি’ গ্রেড পেল এই কলেজ। এই ফলাফলে উচ্ছ্বসিত কলেজের অধ্যক্ষ থেকে অধ্যাপক-অধ্যাপিকারা।
২০০৭ সালে পঠন-পাঠন শুরু কলেজে। স্থানীয় একটি স্কুলের দু’টি রুম নিয়ে বেশ কয়েক বছর পঠন-পাঠন চলে। ছিল না পুরো সময়ের অধ্যাপক-অধ্যাপিকা। তারপর নতুন বিল্ডিং আর ধীরে ধীরে পরিকাঠামোর উন্নয়ন করে নতুন রূপে পথ চলা। তারপরে কলেজ কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেন ন্যাকের মূল্যায়ন করাবেন। সেই মতো প্রায় দেড় বছর ধরে চলে ন্যাক ভিজিটের প্রস্তুতি। মে মাসের ১৯ এবং ২০ তারিখ দু’দিন ধরে চলে ন্যাকের অনলাইন ভেরিফিকেশন। আর সেই ভিজিটের ফলাফল এসে পৌঁছয় রাজ্যের অন্যান্য কলেজের সঙ্গে জীবনতলা কলেজেও। যেখানে ‘বি’ গ্রেড পেয়েছে জীবনতলা রোকেয়া মহাবিদ্যালয়।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী ন্যাকের সদস্যরা আর সশরীরে ভিজিট করেন না। মার্চ মাস থেকে নিয়মের পরিবর্তন হয়েছে। ভারতবর্ষজুড়ে সেই নিয়মগুলি ইতিমধ্যে কার্যকর হয়েছে। সেই নিয়ম এই প্রথম রাজ্যের যে ১৩টি কলেজে অনলাইন ভিজিট হল তার মধ্যে জীবনতলা রোকেয়া মহাবিদ্যালয় অন্যতম।
তবে প্রত্যেকটি কলেজ অনেক পুরনো। সেই কলেজগুলি জীবনতলা রোকেয়া মহাবিদ্যালয় থেকে পরিকাঠামো এবং আর্থিকভাবে অনেক বেশি স্বাবলম্বী। এদিকে আর্থিক ও পরিকাঠামোগত দুর্বলতা কাটিয়ে যেভাবে জীবনতলা রোকেয়া মহাবিদ্যালয় ন্যাকের বিচারে ‘বি’ গ্রেড পেয়েছে তা সত্যিই অবাক করা। শুধু তাই নয়, এই প্রথম এই কলেজে ন্যাকের মূল্যায়ন হল।
এবিষয়ে জীবনতলা রোকেয়া মহাবিদ্যালয়ের অধ্য়ক্ষ অনুপ মাজী বলেন, “কলেজে আমি নতুন এসেছি। এখনও দু’বছর হয়নি। আর তার মধ্যেই আমাদের ন্যাক করতে হয়েছে। পাঁচবছর পর যখন আবার নতুন করে ন্যাকের মূল্যায়ন হবে তখন আরও ভালো ফলাফল যাতে করা যায় সেই লক্ষ্যে আমাদের এগোতে হবে।”
এলাকার উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে কলেজের উন্নয়ন হয়েছে। পরিকাঠামোগত কিছু ঘাটতি বর্তমানেও আছে। সেই বিষয়গুলি ন্যাকের প্রতিনিধিরা কলেজ কর্তৃপক্ষকে ইতিমধ্যে জানিয়ে দিয়েছেন। আর সেই বিষয়গুলোতে নজর রেখেই আগামী পাঁচবছর কাজ করা হবে যেমনটাই জানানো হয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষের তরফে।
এই বিষয়ে জীবনতলা রোকেয়া মহাবিদ্যালয়ের সম্পাদক তথা বিধায়ক শওকত মোল্লা বলেন, “আমাদের পিছিয়ে পড়া এলাকার কলেজ। আর সেই কলেজের প্রথম ন্যাকের মূল্যায়নে যেভাবে জীবনতলা রকেয়া মহাবিদ্যালয় ‘বি’ গ্রেড পেয়েছে সেটা যথেষ্ট প্রশংসার দাবি রাখে। এই মূল্যায়ন প্রমাণ করে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে।”