শ্রীকান্ত পাত্র, ঘাটাল: বর্ষা শুরু হতে না হতেই রাস্তার হতশ্রী চেহারা ফুটে উঠল দাসপুরের নাড়াজোল গ্রাম পঞ্চায়েতের বাছরাকুন্ডু গ্রামে। মাটির রাস্তাটি এতটাই বেহাল যে অসুস্থ রোগীকে ডুলিতে তুলে কাঁধে ঝুলিয়ে নিয়ে যেতে হচ্ছে হাসপাতালে। শুক্রবারের এই দৃশ্য সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর এক নম্বর ব্লকে। অসুস্থ রোগীকে ডুলিতে ঝুলিয়ে নিয়ে যেতে হচ্ছে চিকিৎসা কেন্দ্রে। অভিযোগ, রাস্তা এতটাই বেহাল যে কোনও বাইক বা চার চাকার গাড়ি ঢুকতে চাইছে না বাছরাকুন্ডু গ্রামে।
এ বিষয়ে দাসপুর এক নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুকুমার পাত্র বলেন , ‘‘নাড়াজোল গ্রাম পঞ্চায়েতের বাছরাকুন্ডু গ্রামের ওই রাস্তা মেরামতির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল ২০১৯ -২০ সালে। অনেকটা রাস্তা তৈরিও হয়ে যায়। কিন্তু মাঝপথে কিছু গ্রামবাসীর বাধাদানের ফলে রাস্তার কাজ আটকে যায় । ফলে টাাকও ফেরৎ গিয়েছে । ওই রাস্তা তৈরির জন্য ফের (২০২৪-২৫) পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষ থেকে জেলা পরিষদে প্রস্তাব জমা দেওয়া হয়েছে । টাকা বরাদ্দ হয়ে এলেই কাজ শুরু হবে। আমরাও তো খারাপ লাগছে অসুস্থ রোগীকে এভাবে নিয়ে যেতে হচ্ছে ! ’’
দাসপুর এক নম্বর ব্লকের নাড়াজোল গ্রাম পঞ্চায়েতের বাছরাকুন্ডু গ্রামের যুবক সুজন দোলই বাইক দুর্ঘটনায় মারাত্মক জখম হন। চিকিৎসার জন্য পুর্ব মেদিনীপুর জেলার মেচগ্রামে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্চিল শুক্রবার। কিন্তু গ্রাম থেকে দাসপুর মেদিনীপুর রাজ্য সড়কে নিয়ে আসার জন্য কোনও বাইক বা চার চাাকর গাড়ি ঢুকতে চাইছে না। কেননা, মাটির রাস্তায় বৃষ্টির জেরে এতটাই কাদায় ভরে উঠেছে যে কোনও গাড়িই যেতে চাইছে না গ্রামে। তাই অগত্যা ডুলিই ভরসা!
ডুলিতে ঝুলিয়ে কাঁধে চাপিয়ে ওই কাদা রাস্তা পেরিয়ে গ্রামেরই চারজন পাকা রাস্তায় নিয়ে আসেন সুজনকে। বৃষ্টির হাত থেকে রেহাই পেতে ডুলিটিকে পলিথিনে মুড়ে দেওয়া হয়েছে। যে দৃশ্য ১০ বছর আগে গ্রামে হামেশাই দেখা যেত বলে জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা । এই দৃশ্য দ্রুত সমাজ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে । অসুস্থ সুজনের কাকা মনোরঞ্জন দোলই ডুলি কাঁধে নিয়ে বলেন, ‘‘এই রাস্তা মেরামতির জন্য আগে একবার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু গ্রামেরই একাংশের বাধায় রাস্তার কাজ বন্ধ হয়ে যায়। জমি নিয়ে একটা সমস্যা হয়েছিল । তারপর থেকে আর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ফলে আমরা চরম দুর্ভোগে পড়েছি। কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে এভাবেই নিয়ে যেতে হয়।’’
জানা গিয়েছে, প্রায় এক কিলোমিটার বেহাল রাস্তা ও একটি কার্লভাটের জন্য প্রায় ৩০ লক্ষ টাাকর প্রয়োজন । দাসপুর এক নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুকুমারবাবু বলেন, ‘‘অত টাকা গ্রাম পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতির নেই । তাই আমরা জেলা পরিষদের দ্বারস্থ হয়েছি। আমরা জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগযোগ করছি যাতে দ্রুত টাকা বরাদ্দ হয়।’’