সুমন করাতি, হুগলি: যক্ষ্মায় অসুস্থ বাবা। তেমন কাজ করতে পারতেন না। এদিকে মেয়ে আবার বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন। তাকে যেন বুক দিয়ে আগলে রাখতেন ঠাকুমা। সেই মেয়েই নাকি আর নেই। প্রথমে নিখোঁজ। ৪৮ ঘণ্টা পর পুকুর থেকে উদ্ধার দেহ। সম্ভবত ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে তাকে। বাস্তব মানতে পারছেন না বৃদ্ধা। নাতনিকে হারানোর যন্ত্রণায় ছটফট করছেন। ভেজা চোখে তাঁর বিলাপ, “মেয়েটা শেষবার আমার রান্না করা ভাত-ডাল-ডিম খেয়েছিল।”
কানাইপুরের ঘটনায় ধৃত অসীম মজুমদারের সঙ্গে নাবালিকার বাবার পরিচয় দীর্ঘদিনের। একসময় একইসঙ্গে দিনমজুরের কাজ করত তারা। স্থানীয় সূত্রে খবর, অসীম বিবাহিত। তবে একাধিক নারীর প্রতি টান ছিল তার। সে কারণে স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে যান। গত মঙ্গলবার মাটি কাটার কাজ রয়েছে বলে নাবালিকার বাবাকে ডাকতে যায় অসীম। নাবালিকার বাবা অসুস্থ। তাই কাজে যেতে পারেননি। এরপর নাবালিকার বাবা অসীমকে বলেন, তাঁর মেয়েকে কাকার বাড়ি দিয়ে আসতে। সেই শেষবার। গত মঙ্গলবার অসীমের সঙ্গে বাড়ি থেকে বেরয় নাবালিকা। তারপর ৪৮ ঘণ্টা কেটে যায়। দু’দিন ধরে চিন্তায় নিদ্রাহীন দিন কাটে নাবালিকার ঠাকুমার। তিনি স্থানীয় বাজারে শাকসবজি বিক্রি করে সংসার চালান।
বৃহস্পতিবার তার দেহ উদ্ধারের পর থেকে শুধু কেঁদেই চলেছেন নাবালিকার ঠাকুমা। তিনি বলেন, “মেয়েটা শেষবার আমার হাতে রান্না করা ভাত, ডাল, ডিম খেয়েছে।” অভিযুক্ত অসীমের ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন তিনি। একসময়ের বন্ধু যে তাঁর মেয়ের সঙ্গে এমন কাণ্ড ঘটাতে পারে, তা যেন ভাবতেই পারেননি নাবালিকার বাবা। শোকে পাথর নাবালিকার মা-ও। অভিযুক্তের ফাঁসি চাইছেন তিনি। এই ঘটনা সংক্রান্ত আরও তথ্যের খোঁজ অসীমকে দফায় দফায় জেরা করছে পুলিশ।