সোমনাথ মণ্ডল
গজ়ল গায়ক গুলাম আলির, ‘চুপকে চুপকে রাত দিন...।’ তাঁর মিউজ়িক লিস্টে হট ভেফারিট। সময় পেলে তিনিও গজ়ল লেখেন। উর্দু কবিদের মধ্যে পছন্দের নাসির কাজ়মি ও ইরফান সিদ্দিকী।
ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি উর্দু শায়েরির বইও লিখেছেন তিনি। তাঁরই কলমে এ বার উঠে এল, ‘ডিজে পে মস্ত কোয়ি গানা বাজা...যব তক ইয়ে শ্বাস চলে, শোর মচা...।’ সিনেমার আইটেম সংয়ে প্রথবার তিনি কথা দিলেন।
না, তিনি বলিউড বা টলিউডের কোনও নামকরা সুরকার বা গীতিকার নন। তিনি আইপিএস মুরলীধর শর্মা। তিনি কলকাতা পুলিশের প্রাক্তন গোয়েন্দা প্রধানের পদ সামলেছেন। সাড়া ফেলে দেওয়া খুন-ডাকাতির কিনারা করেও উর্দু সাহিত্য এবং গজ়ল নিয়ে নিয়ত চর্চা চালিয়ে গিয়েছেন তিনি।
তাঁর লেখা গানটি বলিউডের গায়িকা সুনিধি চৌহানের গলায় ব্যবহার হয়েছে বাংলা সিনেমা ‘মৃগয়া-দ্য হান্ট’ ছবিতে। সুস্মিতা চট্টোপাধ্যায়ের এই আইটেম ডান্স ইতিমধ্যেই আগুন ছড়িয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
গানটির সঙ্গীত পরিচালক রানা মজুমদার। সিনেমার স্টোরি লাইন পুলিশ অফিসারদের কেন্দ্র করেই আবর্তিত হয়েছে। যা বাস্তব উদাহরণ থেকে নেওয়া। উত্তর কলকাতার একটি সত্য ঘটনার অবলম্বনে তৈরি হয়েছে ওই চিত্রনাট্য। সেটি লিখেছেন কলকাতা পুলিশের ওসি দেবাশীষ দত্ত। তাঁর লেখা চারটি গানও রয়েছে এই সিনেমায়।
গুলজ়ার যেমন, ‘মেরা কুছ সামান...’–এর মতো গান উপহার দিয়েছেন। তেমনই তাঁরই কলমে উঠে এসেছে, ‘বিড়ি জ্বালাইলে...’। গজ়ল নিয়ে চর্চা করলেও, চিত্রনাট্যের প্রয়োজনে গানের লিরিক্স লেখার এই চ্যালেঞ্জ প্রসঙ্গে মুরলীধর বলছেন, ‘প্রথমে আমি খুবই দ্বিধায় ছিলাম। কারণ কখনও সিনেমার জন্য গান লিখিনি। আমি গজ়ল লিখি, যার বিষয়বস্তু পুরোপুরি আলাদা। তারপরও আমাকে সঙ্গীত পরিচালক অনুরোধ করেছিলেন। আমার এই প্রচেষ্টা কতটা ভালো হয়েছে, তা শ্রোতারাই বলতে পারবেন।’
ভবিষ্যতেও কী আবার সিনেমার গান লেখকের ভূমিকায় দেখা যাবে তাঁকে। মুরলীর জবাব, ‘আমি এ সব নিয়ে নিয়ে ভাবছি না। তবে, যদি কোনও ভালো প্রস্তাব আসে, বিবেচনা করতে পারি।’
মানিকতলা থানার ওসি দেবাশীষ বলেন, ‘যে চিত্রনাট্যের উপরে সিনেমা হয়েছে, তা এখনও বিচারাধীন। পুলিশের চরিত্রগুলো বাস্তব থেকে নেওয়া।’ অভিরূপ ঘোষ পরিচালিত ‘মৃগয়া-দ্য হান্ট’ ছবিতে অভিনয় করছেন, ঋত্বিক চক্রবর্তী, অনির্বাণ চক্রবর্তী, বিক্রম চট্টোপাধ্যায় এবং রেজওয়ান রব্বানি শেখ। খলচরিত্রে সৌরভ দাস।