এই সময়: বৃহস্পতিবার আলিপুরদুয়ারের সভা থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রাজ্য সরকার তথা বাংলার শাসকদলের বিরুদ্ধে যে ক’টি অভিযোগ তুলেছেন, তার অন্যতম হলো নারী নিরাপত্তা। মোদীর সভার কিছুক্ষণের মধ্যেই এ নিয়ে কড়া জবাব দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বিজেপি শাসিত বিভিন্ন রাজ্যে নারী নির্যাতনের প্রসঙ্গ তুলে নারীদের নিয়ে বিজেপি নেতাদের করা অপমানজনক মন্তব্যের উদাহরণ দিয়ে মমতার জবাব— দেশের মধ্যে বাংলাই হলো নারীদের জন্য সবথেকে সুরক্ষিত রাজ্য। নারীদের নিয়ে কুমন্তব্য করা নেতাদের বিজেপি কেন শাস্তি দেয় না, সেই প্রশ্নও তোলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।

এ দিনের সভা থেকে মোদী বাংলার পাঁচ সঙ্কটের কথা তুলে ধরেন। তার দ্বিতীয়টি হলো নারী নিরাপত্তা। প্রধানমন্ত্রীর কথায়, ‘বাংলার অন্যতম সঙ্কট হলো, মা–বোনেদের উপরে অত্যাচার এবং তাঁদের নিরাপত্তার অভাব।’

এ দিন নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মোদীর অভিযোগ উড়িয়ে মমতা বলেন, ‘দেশের মধ্যে একমাত্র বাংলাতেই মা-বোনেরা সুরক্ষিত। এখানে মহিলারা নিরাপত্তার অভাব বোধ করেন না বলেই খোলা মনে সব কাজ করতে পারেন। সেই জন্য বাংলার মহিলাদের সাফল্যের হার বেশি।’

এই প্রসঙ্গে বিজেপি-শাসিত উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থানের একাধিক ঘটনার উদাহরণ দেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘উন্নাও, হাথরসে মহিলাদের উপরে অত্যাচার করেই দুষ্কৃতীরা ক্ষান্ত হয়নি। অত্যাচারের পরে তাঁদের খুন করা হয়েছে।’

তাঁর সংযোজন, ‘তার পরে কী হয়েছে? দোষীরা ছাড়া পেয়ে গিয়েছে। তাদের মালা পরিয়ে বরণ করা হয়েছে। যাঁদের উপরে নিগ্রহ হয়েছে, তাঁদের পরিবারকে সন্ত্রস্ত করতে অভিযুক্তদের বীরের সম্মান দিয়ে এলাকায় ঘোরানো হয়েছে।’

বাংলার কয়েকটি ঘটনার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মমতা বলেন, ‘এখানে কোনও ঘটনা ঘটলে পুলিশ কড়া ব্যবস্থা নেয়। আমরা দ্রুততার সঙ্গে বিচার শেষ করে অভিযুক্তদের সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করেছি। ফলে মোদীজি এই ধরনের অভিযোগ করার আগে যেন বিজেপি শাসিত রাজ্যের ঘটনাবলির দিকে আলোকপাত করেন।’

সম্প্রতি পহেলগামে নিহত ব্যক্তিদের স্ত্রীদের নিয়ে কুমন্তব্য করেছিলেন বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ রামচন্দ্র জ্যাংরা। তার আগে ভারতীয় সেনার কর্নেল সোফিয়া কুরেশিকে কার্যত ‘টেররিস্টের বোন’ বলে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন মধ্যপ্রদেশের বিজেপি নেতা ও মন্ত্রী বিজয় শাহ।

কর্নাটকের বিজেপি নেতা রবিকুমার সে রাজ্যের এক মহিলা আইএএসকে কার্যত ‘পাকিস্তানি’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন। এই সব প্রসঙ্গ তুলে মমতার বক্তব্য, ‘যে দলের সাংসদ বলেন, মহিলাদের উচিত ছিল জঙ্গিদের দমন করা, তাঁকে শাসন করার ক্ষমতা নেই? তাঁকে তো সঙ্গে সঙ্গে স্যাক করা উচিত ছিল।’