নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করল এসএসসি! অনলাইনে আবেদন করা যাবে কবে থেকে? কবেই বা প্রকাশিত হবে প্যানেল
আনন্দবাজার | ৩০ মে ২০২৫
সরকারি স্কুলে নবম-দশম এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির জন্য সহকারী শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করল স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)। গত মঙ্গলবারই নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, সুপ্রিম কোর্ট ৩১ মে-র মধ্যে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করতে বলেছে। ৩০ মে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে বলে তখনই জানিয়েছিলেন তিনি। সেই মতো শুক্রবার সকালে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে দিল এসএসসি।
মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী পরীক্ষার্থীদের আবেদনের সময়সীমা, প্যানেল প্রকাশের সম্ভাব্য সময়সীমা জানিয়ে দিয়েছিলেন। এসএসসির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আগামী ১৬ জুন থেকে অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন পরীক্ষার্থীরা। অনলাইনে আবেদন করার শেষ দিন ১৪ জুলাই। নবম-দশম এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির সহকারী শিক্ষক পদের জন্য আবেদন করলে সাধারণ এবং অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি (ওবিসি)-র পরীক্ষার্থীদের জমা দিতে হবে ৫০০ টাকা। আর তফসিলি জাতি (এসসি), উপজাতি (এসটি), প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীদের দিতে হবে ২০০ টাকা। পরীক্ষায় বসার ফি জমা দিতে হবে ১৪ জুলাই রাত ১২টার আগে।
লিখিত পরীক্ষার সম্ভাব্য সময় সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহ। লিখিত পরীক্ষার ফলপ্রকাশ হতে পারে অক্টোবরের চতুর্থ সপ্তাহে। ইন্টারভিউয়ের সম্ভাব্য সময় নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে তৃতীয় সপ্তাহ। প্যানেল প্রকাশিত হবে ২৪ নভেম্বর। কাউন্সেলিং এবং নিয়োগের প্রস্তাব সংক্রান্ত ঘোষণা হতে পারে ২৯ নভেম্বর।
দুর্নীতির অভিযোগে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এসএসসি-র ২০১৬ সালের সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিল হয়ে গিয়েছে। চাকরি গিয়েছে ২৫,৭৩৫ জনের। তাঁদের জন্য রাজ্য সরকারকে নতুন করে নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু করতে বলে শীর্ষ আদালত। যে কোনও ধরনের অনিয়ম রুখতে এসএসসি ইন্টারভিউতে ডাক পাওয়া চাকরিপ্রার্থীদের মূল্যায়িত উত্তরপত্র ওয়েবসাইটে প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী জানান, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়ায় বিজ্ঞপ্তি জারি করা হচ্ছে। আগামী ৩০ মে এই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে। অনলাইনে আবেদনের শেষ দিন ১৪ জুলাই। পরীক্ষা, স্ক্রুটিনি, ইন্টারভিউয়ের পর আগামী ১৫ নভেম্বর প্যানেল প্রকাশ করা হবে। সেই অনুযায়ী কাউন্সেলিং হবে ২০ নভেম্বর থেকে। চাকরিহারাদের এই প্রক্রিয়ায় যোগ দিতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী। একই সঙ্গে তিনি জানান, রিভিউ পিটিশনের মাধ্যমেও আইনি লড়াই চালিয়ে যাবে রাজ্য সরকার। যাঁরা ‘দাগি’ নন, সেই চাকরিহারারা নতুন করে পরীক্ষায় বসতে নারাজ। মমতা জানান, তাঁদের হয়ে সরকার লড়বে। কিন্তু আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী তাঁদেরও নিয়োগপ্রক্রিয়ায় যোগ দিতে হবে।
বুধবার মধ্যরাতে পরীক্ষার নয়া বিধি প্রকাশ করে কমিশন। নয়া বিধিতে জোর দেওয়া হয় শিক্ষকতার পূর্ব অভিজ্ঞতা এবং ক্লাস নেওয়ার দক্ষতার উপরে। জানানো হয়, লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হবে ৬০ নম্বরের। আগে এটি ছিল ৫৫ নম্বরের। শিক্ষাগত যোগ্যতার উপরে থাকবে সর্বোচ্চ ১০ নম্বর। আগে এটি ছিল ৩৫ নম্বর। ইন্টারভিউয়ে ক্ষেত্রে নম্বর আগেও সর্বোচ্চ ১০ ছিল, এখনও তা-ই রাখা হয়েছে। শিক্ষকতার অভিজ্ঞতার উপর দেওয়া হচ্ছে সর্বোচ্চ ১০ নম্বর। এ ছাড়া ‘লেকচার ডেমোস্ট্রেশন’-এর জন্যও সর্বোচ্চ ১০ নম্বর রাখা হচ্ছে। শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা এবং ‘লেকচার ডেমোস্ট্রেশন’— দু'টিই নতুন সংযোজিত হয়েছে। এই দু’টি মিলিয়ে সর্বোচ্চ মোট ২০ নম্বর রাখা হয়েছে।
২০২৫ সালের ১ জানুয়ারির হিসাবে ৪০ বছর বয়স পর্যন্ত নিয়োগের জন্য আবেদন জানাতে পারবেন চাকরিপ্রার্থীরা। এ ছাড়া, তফসিলি জাতি, জনজাতি এবং অন্য অনগ্রসর শ্রেণির চাকরিপ্রার্থীরা রাজ্য সরকারের নিয়ম অনুসারে বয়সের ঊর্ধ্বসীমায় ছাড় পাবেন।