ট্যাংরাকাণ্ডের ৯৯ দিনের মাথায় প্রসূন ও প্রণয়ের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ, সাক্ষীদের তালিকায় নাবালক সন্তান
প্রতিদিন | ৩০ মে ২০২৫
নিরুফা খাতুন: ট্যাংরার দে পরিবারের তিন সদ্যসকে খুনের মামলায় চার্জশিট পেশ। ঘটনার ৯৯ দিনের মাথায় বৃহস্পতিবার, শিয়ালদহ আদালতে চার্জশিট জমা দিল পুলিশ। তাতে দুই ভাই প্রসূন দে ও প্রনয় দে’র বিরুদ্ধে খুন ও খুনের চেষ্টা-সহ একাধিক ধারা দেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, ১২০০ পাতার ওই চার্জশিটে সাক্ষী রয়েছেন ৫১জন। রয়েছে প্রণয়ের নাবালক ছেলে প্রতীপের নামও।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ভোররাতে বাইপাসের উপর মেট্রোরেলের পিলারে গাড়ির ধাক্কা দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন প্রণয় ও প্রসূন। তখন ওই গাড়িতে ছিল দে পরিবারের নাবালক ছেলে প্রতীপ। এর পরই ট্যাংরায় তাঁদের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় বড় ছেলের স্ত্রী সুদেষ্ণা দে, ছোট ছেলের স্ত্রী রোমি ও প্রসূন-রোমির মেয়ে প্রিয়ংবদার দেহ। তদন্তে উঠে আসে যে, বিদেশে চামড়ার গ্লাভস রপ্তানির ব্যবসায় চূড়ান্ত মন্দা ও ক্ষতির কারণে ‘পিঠ ঠেকে’ যায় প্রণয় ও প্রসূনের। তারা দুই স্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেই প্রথমে ছোট সন্দেশ ও তারপর পায়েসের মধ্যে ওষুধ মিশিয়ে খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। তাতেও কারও মৃত্যু হয়নি। তাই সুদেষ্ণা ও রোমির হাতের শিরা এবং গলা কেটে ও নাবালিকা কিশোরী প্রিয়ংবদা দে-কে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়। খুনের চেষ্টা করা হয় বাড়ির নাবালক ছেলেকেও। কিন্তু সে বেঁচে যায়।
পরিবারের তিন সদস্যকে খুনের পর নাবালককে নিয়ে দুই ভাই গাড়িতে চেপে বেড়িয়ে যান। আত্মহত্যার জন্য বাইপাসে নিজেরাই গাড়ি দুর্ঘটনা ঘটায় বলে দাবি করেন দুই ভাই। যদিও দুর্ঘটনায় নাবালক-সহ তিনজনই প্রাণে বেঁচে যান। দীর্ঘদিন তাঁরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। চিকিৎসার পর প্রসূন ও নাবালক ছেলেকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর প্রসূনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। কিছুদিন আগে প্রণয়কে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে প্রণয়কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এই মামলায় মূল সাক্ষী নাবালক। তার বয়ানের ওপর ভিত্তি করে প্রণয় ও প্রসূনের বিরুদ্ধে খুন ও খুনের চেষ্টার মামলা রুজু করে পুলিশ। এ ছাড়াও দে পরিবারের চামড়ার কারখানার সঙ্গে যুক্ত একাধিক ব্যক্তি ও কয়েকজন আত্মীয়-পরিজন এই মামলার সাক্ষী হয়েছেন বলে পুলিশ সূত্রে খবর।