• ‘শম্বুক’ গতিতে বিচার, বিষমদ কাণ্ডে জেলাশাসককেই কাঠগড়ায় তুলল আদালত
    প্রতিদিন | ৩০ মে ২০২৫
  • গোবিন্দ রায়: বিচার প্রক্রিয়া ধীর গতিতে চলার দায়ে জেলা প্রশাসনকেই কাঠগড়ায় তুলে দিল বনগাঁ আদালত। শুধু তাই নয়, চোদ্দ বছরে আগের বিষ মদের কারবার সংক্রান্ত এক মামলায় গত পাঁচ বছরে আদালত একাধিকবার বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটির (পিপি) নিয়েগের নির্দেশ দিলেও, তা না মানায় উত্তর ২৪ পরগনার জেলা শাসক (ডিএম)-এর ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে জবাবদিহি তলব করেছেন বনগাঁর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক প্রদীপ কুমার অধিকারী। ডিএময়ের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে, বিচারাধীন ওই মামলা কেন হাই কোর্টের ‘রেফার’ করা হবে না ? একই সঙ্গে, পিপি নিয়োগের ক্ষেত্রে শেষ সুযোগ দিয়ে এ বিষয়ে উত্তর ২৪ পরগনার জেলা মুখ্য বিচারক ও রাজ্যের মুখ্য সচিব কেও অবগত করেছে আদালত।

    জানা গিয়েছে, ২০১১ সালের ঘটনা। বিষ মদের কারবারির অভিযোগে বৈদ্য মন্ডল নামে ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে বনগাঁ থানার পুলিশ। তার বিরুদ্ধে আইপিসি ২৭২, ২৭৩ সহ আবগারি আইনে মামলা রুজু করে পুলিশ। কিন্তু ১৪ বছরেও সেই মামলার নিষ্পত্তি হল না বনগাঁ আদালতে। ২০১১ থেকে এ পর্যন্ত মামলা বিচারাধীন। ২০২০ সালের মাত্র একজন সাক্ষ্য দান হলেও সরকারি কৌশলীর অভাবে থমকে বিচার প্রক্রিয়া। জামিনে থাকা আসামি আসে, কিন্তু বিচার না পেয়ে খালি হাতেই ফিরে যেতে হয়। ২০২০ সালের সেসময় এই মামলার জন্য বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। কিন্তু কোন কাজ হয়নি। পরপর ২০২৩ সাল, ২০২৪, ২০২৫ সালে এসে একাধিকবার নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও পিপি নিয়োগ হয়নি। সম্প্রতি আদালতের নির্দেশ না মানা নিয়ে জেলা শাসকের এই ভূমিকায় ফুচকা তুলেছে আদালত।

    ডিএময়ের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বিচারক প্রদীপ কুমার অধিকারীর পর্যবেক্ষণ, “একজন জেলাশাসক আদালতের নির্দেশ মানছেন না, এটা বিচার ব্যবস্থার জন্য অত্যন্ত খারাপ দিক।” আরও বলেন, “আদালতের নির্দেশ না মানা জেলা শাসকের অভ্যাস হয়ে গিয়েছে। বিচারপ্রার্থীকে দিনের পর দিন বিচার না পেয়ে খালি হাতে ফিরে যেতে হচ্ছে, এর জন্য দায়ী জেলা প্রশাসনই। গত চার বছর একজন পাবলিক প্রস্টিটিউটর নিয়োগ না করায় মামলার বিচারপ্রক্রিয়া এগোচ্ছে না।” সম্প্রতি আদালতের এক নির্দেশ না মানায় ডেপুটি কালেকটর কে পদচ্যুত করা সংক্রান্ত সুপ্রিম কোর্টের এক নির্দেশ কেও উল্লেখ করা হয়েছে এই মামলায়। বিচারক বলেন, “রাজ্যের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করবে পিপি। পিপি না থাকলে মামলা কেমন করে চলবে !”
  • Link to this news (প্রতিদিন)