মুর্শিদাবাদের এক শিক্ষক বৃহস্পতিবার আচমকাই মারা গিয়েছেন। তাঁর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন ভোরে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন। পরিবারের লোকজন তাঁকে জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু চিকিৎসকরা তাঁকে বাঁচাতে পারেননি। প্রবীণ কর্মকার (৩৩) নামে ওই শিক্ষক জিয়াগঞ্জের আমাইপাড়া বিদ্যাপীঠে পড়াতেন।
স্কুলের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ২০১৯ সালে নবম-দশম শ্রেণির ইংরেজির শিক্ষক হিসেবে ওই স্কুলে যোগ দিয়েছিলেন প্রবীণ। ২০১৬ সালের এসএসসি-র প্যানেলে তাঁর নাম ছিল। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর প্রবীণ-সহ ওই স্কুলের চার জন শিক্ষক চাকরিহারা হন। এর পর নতুন করে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ জারি করলে ফের স্কুলে তিনি যোগ দিয়েছিলেন। মুর্শিদাবাদ জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক দপ্তরে স্কুল সার্ভিস কমিশনের পাঠানো যোগ্য শিক্ষকের তালিকাতেও তাঁর নাম ছিল।
ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুদর্শন বিশ্বাস বলেন, ‘গত ৩০ এপ্রিল থেকে আমাদের স্কুলে গরমের ছুটি শুরু হয়। সেই দিনও প্রবীণ স্কুলে এসেছিলেন। তবে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ফের স্কুলে যোগ দেওয়ার পর থেকেই চাপে ছিলেন।’ প্রবীণের ঘনিষ্ঠ সূত্রের একাংশ জানান, সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, ২০১৬ সালের প্যানেলের চাকরিহারাদের ফের চাকরির পরীক্ষায় বসতে হবে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে মানসিক চাপে ছিলেন প্রবীণ। কারণ গত কয়েক বছর ধরে তিনি চাকরির পড়াশোনা থেকে দূরে ছিলেন। এই অবস্থায় আবার নতুন করে পড়াশোনা করে পরীক্ষা দিয়ে চাকরি পাওয়ার অনিশ্চিয়তা নিয়ে প্রবল মানসিক চাপে ছিলেন প্রবীণ।
প্রবীণের ঘনিষ্ঠরা আরও জানান, এ নিয়ে তিনি ভেতরে ভেতরে অবসাদেও ভুগছিলেন। স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘প্রবীণ পড়ুয়াদের কাছে খুব জনপ্রিয় ছিলেন। দরদ দিয়ে পড়াতেন। খুব হাসিখুশি ছিলেন। তিনি খুব সহজে পড়ুয়াদের সঙ্গে মিশে যেতে পারতেন।’ পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রবীণেরা তিন ভাই। তাঁদের মধ্যে প্রবীণ মেজ। বাড়িতে বয়স্ক বাবা-মা রয়েছেন। তবে, প্রবীণের মৃত্যুতে রঘুনাথগঞ্জ থানায় পরিবারের তরফে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।