• MA পাশ, পেশা জুতো সেলাই গঙ্গারামপুরের বিজয়ের
    এই সময় | ২৯ মে ২০২৫
  • শীতল চক্রবর্তী, গঙ্গারামপুর

    ‘এমবিএ চায়েওয়ালা’-র কথা হয়তো কমবেশি সকলেরই জানা। এমবিএ পাশ প্রফুল বিল্লোরে এখন দেশখ্যাত চা ব্যবসায়ী। তবে এমএ পাশ বিজয়ের প্যাসন না-হলেও পেটের তাগিদে তিনি করেন জুতো সেলাই।

    কথায় আছে, জুতো সেলাই থেকে চণ্ডীপাঠ-দুনিয়ায় কোনও কাজই নয় ছোট। দু’টোতেই সমান পারদর্শী গঙ্গারামপুর পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাঁধমোড়ের বাসিন্দা বিজয় রবিদাস। অনেক ‘চণ্ডীপাঠ’ করেও যখন সরকারি চাকরির কোনও সুযোগ আসেনি, তখন জুতো সেলাইকেই নিজের জীবিকা হিসেবে বেছে নিয়েছেন তিনি। তবে তাতে এতটুকুও দ্বিধা নেই তাঁর।

    দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুর হাইরোডের ধারে চৌপথিতে গেলেই দেখা যায়, সরঞ্জামের বক্স সামনে নিয়ে একমনে জুতো সেলাইয়ের কাজ করছেন তিনি। এমনকী, তাঁর ছোট দোকানে আসা বহু নিয়মিত খদ্দেরও জানেন না বিজয়ের কাহিনি। ২০১২-এ রাষ্ট্রবিজ্ঞানে মাস্টার্স করেন তিনি।

    তার পরে প্রায় এক যুগ ধরে স্কুল-কলেজ, রেল, ব্যাঙ্কের বিভিন্ন গ্রুপের পরীক্ষা দিলেও কোনও জায়গা থেকে ডাক আসেনি। যা শুনে অবাক হয়ে তাঁর দোকানে আসা অর্চনা হালদার, রাধারানি সরকার, দেবু রায় ও কার্তিক দেবনাথরা বলেন, ‘সামান্য মজুরির বিনিময়ে বিজয় খুব ভালো কাজ করেন। তাই তো ওর কাছেই আসি।’

    বর্তমানে স্ত্রী, সন্তান ও মাকে নিয়ে বিজয়ের ছোট সংসার। তবে এই পেশা নিয়ে কোনও আক্ষেপ নেই তাঁর। এ ভাবেই জীবন সংগ্রামে দৌড়ে চলা বিজয় বলেন, ‘আসলে কোনও কাজই ছোট নয়। এই পেশা নিয়ে তাই আমার কোনও দ্বিধা নেই। এত বছর ধরে সরকারি চাকরির জন্য কম চেষ্টা করিনি। কিন্তু কোনও ফল মেলেনি। এখনও যদি কোনও সুযোগ আসে, জীবনটা হয়তো একটু বদলে যাবে। সেই অপেক্ষা শেষ না হলেও হাত গুটিয়ে তো বসে থাকা যায় না।’

    অন্য দিকে, বিজয়ের কথা শুনে তাঁর পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে গঙ্গারামপুর পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান জয়ন্তকুমার দাসের বক্তব্য, ‘বিজয় যদি পুরসভা থেকে কোনও সহযোগিতা চান, আমাদের তরফে তাঁকে সব ধরনের সাহায্য করা হবে।’

  • Link to this news (এই সময়)