লক্ষ্য, ২৬-এর নির্বাচনে বাংলার মসনদ দখল। মুর্শিদাবাদ, মালদায় সাম্প্রদায়িক অশান্তির ঘটনা, নিয়োগ দুর্নীতি এবং নারী নিরাপত্তার অভাবের অভিযোগ তুলে, সেই অস্ত্রেই শান দিতে চাইছে বিজেপি।বৃহস্পতিবারের আলিপুরদুয়ারের সভা থেকে বিজেপি কর্মী, সমর্থকদের সেই পথই দেখিয়ে গেলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
মোদীর বক্তব্যের বড় অংশ জুড়েই ছিল রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার দুরাবস্থা ও নিয়োগ দুর্নীতির কথা। চাকরি বাতিলের প্রসঙ্গ তুলে তৃণমূলকে বিঁধে মোদী বলেন, ‘শাসকদলের নেতাদের দুর্নীতির জন্য এখানকার শিশুদের ভবিষ্যৎ নষ্ট হচ্ছে। কিন্তু তারা নিজেদের ভুল মানতেই চাইছেন না। উল্টে আদালতকে আক্রমণ করছে। তৃণমূল সরকার অভিযুক্তদের বাঁচানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু বিজেপি এলে এটা কোনওভাবেই হতে দেবে না।’
‘অপারেশন সিঁদুর’-এর সাফল্যের পরে প্রথম রাজ্যে পা রাখেন মোদী। গ্যাস প্রকল্পের উদ্বোধনের পরে জনসভায় উপস্থিত ছিলেন তিনি। বক্তব্যের মাঝেই মোদী উল্লেখ করেন, রাজ্যের মানুষের ‘আস্থা নেই’ বর্তমান সরকারের উপর। এর জন্য মোট পাঁচটি কারণ রয়েছে। কী কী সেই কারণ? এক, দুই করে গুনে সভা থেকেই সেগুলি খোলসা করেন নমো।
‘বাংলার চিৎকার, চাই না এই নির্মম সরকার’—স্লোগান বেঁধে দিয়ে মোদীর বক্তব্য, ‘মানুষের অনাস্থা তৈরি হয়েছে সরকারের উপর কারণ, এক, বাংলায় সীমাহীন দুর্নীতি, দুই, মা-বোনদের নিরাপত্তা নেই, তিন, যুব সম্প্রদায় অসহায়, তাঁদের জন্য কোনও কর্মসংস্থান নেই। চার, বাংলার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। পাঁচ, বাংলায় একটি স্বার্থপর রাজনৈতিক দল রয়েছে।
যদিও, মোদীর বক্তব্যের পাল্টা আক্রমণ করেছেন তৃণমূল। রাজ্যের শাসকদল এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করেছে, ‘মোদী ৫ সঙ্কটের কথা বলেছেন। এক, আইন-শৃঙ্খলা? মণিপুর দুই বছর ধরে জ্বলছে। দুই, নারীদের নিরাপত্তা? উন্নাও থেকে হাথরস পর্যন্ত বিজেপির যা ট্র্যাক রেকর্ড তার জন্য বিজেপির নীরব থেকে লজ্জা পাওয়া উচিত। তিন, যুবসমাজের হতাশা? তৃণমূলের উত্তর—প্রশ্নপত্র ফাঁস, NEET কেলেঙ্কারি এবং দেশে ৪৫% বেকারত্ব। ছাত্রদের জন্য বিজেপির জাতীয় উপহার।
চার, দুর্নীতির ইস্যুতে তৃণমূলের জবাব—তোমার মন্ত্রিসভার অর্ধেকই জামিনে মুক্ত রয়েছে এবং পাঁচ, বাংলার সরকার স্বার্থপর সরকার? তৃণমূলের ব্যাখ্যা, কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিহিংসার রাজনীতির কারণে বাংলাকে MGNREGA এবং আবাস যোজনার প্রাপ্য টাকা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।