• বাড়ছে করোনা, মহানগরের হাসপাতালগুলিতে জোর প্রস্তুতি
    এই সময় | ২৯ মে ২০২৫
  • এই সময়: ধীরে হলেও দেশের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে একটু একটু করে করোনা বাড়ছে বঙ্গেও। খাস কলকাতা ও শহরতলিতে তো বটেই, মালদাতেও একজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে কোভিডের মাথাচাড়া দেওয়ার সম্ভাবনার আবহে সরকারি-বেসরকারি, সব হাসপাতালই তাদের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে।

    কেউ তৈরি করছে নতুন আইসোলেশন ওয়ার্ড, কেউ বা চালু করছে ফিভার ক্লিনিক। কোনও কোনও হাসপাতাল আবার অতিমারী পর্বের মতোই হাসপাতালে বাধ্যতামূলক করছে মাস্ক ও স্যানিটাইজার ব্যবহার। চিকিৎসকরাও আমজনতাকে বলছেন, শঙ্কিত হয়ে পড়ার কোনও কারণ না থাকলেও সাবধানের মার নেই।

    মঙ্গল ও বুধবারও বেশ কয়েকজন কোভিড পজ়িটিভ চিহ্নিত হয়েছেন রাজ্যে। মালদায় এক বছর দুয়েকের শিশু করোনায় আক্রান্ত। তবে হাসপাতালে ভর্তিদের অধিকাংশই বয়স্ক ও কোমর্বিডিটির শিকার। কলকাতার উডল্যান্ডস, বেলভিউ, পিয়ারলেসের মতো হাসপাতালেও নতুন করে কোভিড পজ়িটিভ চিহ্নিত হয়েছেন একজন করে।

    পিয়ারলেসে এই মুহূর্তে দু’জন করোনা নিয়ে চিকিৎসাধীন। এর মধ্যে একজন বছর পনেরোর কিশোর, অন্য জন সোনারপুরের বাসিন্দা এক সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধ। তবে দু’জনেই স্থিতিশীল রয়েছেন। উডল্যান্ডস হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সেখানে আলিপুরের এক ৮৭ বছরের বৃদ্ধের পরে এ দিন ঠাকুরপুকুরের এক ৪১ বছরের মহিলা কোভিড পজ়িটিভ চিহ্নিত হয়েছেন। দু’ জনের কেউ–ই গুরুতর অসুস্থ নন।

    বেলভিউ ক্লিনিকেও চিকিৎসাধীন এক করোনা আক্রান্ত। আর আগে থেকে অ্যাপোলোয় চার জন, শুশ্রূষায় দু’ জন, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে দু’জন এবং আরজি করে একজন করোনা আক্রান্ত ভর্তি রয়েছেন। সকলেই স্থিতিশীল।

    এমন পরিস্থিতিতে যে সব হাসপাতালে কোভিড রোগী ভর্তি হয়নি, সেখানেও পরিষেবার মান ধরে রাখতে চূড়ান্ত প্রস্তুতি চলছে। পিয়ারলেসের সিইও সুদীপ্ত মিত্র বলেন, ‘সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। তিনটে আইসোলেশন কেবিন আর তার মধ্যে একটিতে ইন্টেনসিভ কেয়ারের ব্যবস্থা রয়েছে। প্রয়োজনে এই ব্যবস্থা ১২ ঘণ্টার মধ্যে তিনগুণ করে দিতে প্রস্তুত আমরা। তবে আশা করবো, সেই দিনের মুখ দেখতে হবে না।’

    মণিপাল হাসপাতাল গোষ্ঠীর তরফে ঢাকুরিয়া ক্যাম্পাসের অধিকর্তা দিলীপ রায় জানান, কোভিড প্রোটোকল মেনে সব প্রস্তুতিই সেরে ফেলা হয়েছে। সংক্রমণ বাড়লেও তাঁরা পরিস্থিতি সামলে নিতে পারবেন বলে আত্মবিশ্বাসী।

    ওই হাসপাতাল গোষ্ঠীর অধীন মেডিকার ক্রিটিক্যাল কেয়ারের প্রধান চিকিৎসক তন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘শহরে আমাদের গোষ্ঠীর পাঁচটি হাসপাতাল রয়েছে। সর্বত্রই সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জেনারেল আইসোলেশন ওয়ার্ড তো আছেই, পাঁচটি হাসপাতালের প্রায় ৫০০ ক্রিটিক্যাল কেয়ার বেড নিয়েও আমরা প্রস্তুত রয়েছি। আউটডোরে আসা সব রোগীকেই সতর্ক করা হচ্ছে করোনার সংক্রমণ নিয়ে।’

    আনন্দপুর ফর্টিস হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ জয়দীপ ঘোষ কিংবা চিফ নার্সিং অফিসার ডলি বিশ্বাস থেকে শুরু করে আইএলএস দমদমের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ পিনাকী দে কিংবা টেকনো ইন্ডিয়া ডামা হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপার মহম্মদ শাহনওয়াজ খান, সকলেরই বক্তব্য, তাঁদের হাসপাতালে এখনও করোনা রোগী ভর্তি হয়নি ঠিকই।

    কিন্তু তাঁরা প্রস্তুত রয়েছেন কোভিডের সর্বোত্তম পরিষেবা দিতে। বিপি পোদ্দার হাসপাতালের গ্রুপ অ্যাডভাইজ়র সুপ্রিয় চক্রবর্তী বলেন, ‘করোনা নিয়ে আমরা সতর্ক আছি। রোগী, ভিজিটরস ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষিত রাখার জন্য করা হচ্ছে একগুচ্ছ পদক্ষেপ। প্রয়োজন পড়লেই চালু হয়ে যাবে আইসোলেশন ওয়ার্ড।’

  • Link to this news (এই সময়)