কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ‘অ্যাডভাইজ়রি’ ঘিরে শোরগোল পড়েছে বিভিন্ন কলেজে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ ১৩৮টি কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের সই করা ওই অ্যাডভাইজ়রি পাঠিয়ে জানানো হয়েছে, গরমের ছুটির মধ্যে ২৯ মে থেকে ৩০ জুন কলেজগুলিতে যেন ক্লাস নেওয়া হয়। তবে, বুধবার নিখিল বঙ্গ অধ্যক্ষ পরিষদের কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিট জরুরি বৈঠক ডেকে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, গত কয়েক বছরের মতো এ বারও গরমের ছুটিতে যা যা কার্যক্রম চলছে, সেগুলি চলবে। পড়ুয়াদের কলেজে এনে ক্লাস নেওয়ায় উদ্যোগী হবেন না অধ্যক্ষেরা।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজগুলিতে বহু বছর ধরেই ১৫ মে থেকে ৩০ জুন গরমের ছুটি থাকে। নিখিল বঙ্গ অধ্যক্ষ পরিষদের কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক এবং আশুতোষ কলেজের অধ্যক্ষ মানস কবি বুধবার বলেন, ‘‘চলতি শিক্ষাবর্ষে অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয়। আগের নিয়মানুযায়ী, ১৫ মে গরমের ছুটি দেওয়া হয়। কিন্তু অনলাইনে প্রয়োজনে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। সঙ্গে পড়ুয়ারা ইন্টার্নশিপও করছেন। এ বার আচমকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছ থেকে এমন অ্যাডভাইজ়রি পেয়ে আমরা অদ্ভুত পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছি। পড়ুয়া এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অনেকেই বেড়াতে অথবা ব্যক্তিগত কাজে শহরের বাইরে। এই পরিস্থিতিতে কলেজে তাঁদের এনে ক্লাস শুরু করা অসুবিধাজনক।’’
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দেবাশিস দাসের অবশ্য বক্তব্য, এটি অ্যাডভাইজ়রি। কোনও কলেজকে বাধ্য করা হচ্ছে না। তবে ক্লাস নিলে অফলাইনেই নেওয়া হোক— বিশ্ববিদ্যালয় তা-ই চাইছে। রেজিস্ট্রার বলেন, ‘‘সিমেস্টার ব্যবস্থায় এত দীর্ঘ ছুটি থাকলে সিলেবাস শেষ করা অসুবিধাজনক। গত বছর দেরি করে অভিন্ন পোর্টালে ভর্তি নেওয়ায় সব পড়ুয়াকে নিয়ে ক্লাস শুরু হতে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল। এই রকম পরিস্থিতিতে চলতি শিক্ষাবর্ষে অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডারও প্রকাশ করা যায়নি।’’ মানস জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাডভাইজ়রি সব সময়ে মেনে চলা হয়। কিন্তু, এ বার পরিস্থিতি খুবই অদ্ভুত।
এ দিন বৈঠকের শেষে নিখিল বঙ্গ অধ্যক্ষ পরিষদের কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের সভাপতি এবং নিউ আলিপুর কলেজের অধ্যক্ষ জয়দীপ ষড়ঙ্গী বলেন, ‘‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, গত কয়েক বছর যে ভাবে চলেছে, সে ভাবেই চলবে। গরমের ছুটিতে পড়ুয়াদের কলেজে এনে ক্লাসের ব্যবস্থা করা হবে না।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘প্রতিটি কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকারা দক্ষতার সঙ্গে ছুটির মধ্যে প্রয়োজনীয় অনলাইন পঠনপাঠন এবং ইন্টার্নশিপ সামলাচ্ছেন। অ্যাডভাইজ়রি দেওয়ার আগে আমাদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা বলা প্রয়োজন ছিল।’’