এই সময়, ঘাটাল: গত লোকসভা নির্বাচনেই প্রতিশ্রুতি ছিল রাস্তা মেরামতি করা হবে। কিন্তু বছর ঘুরে গেলেও কোনও কাজই এগোয়নি বলে অভিযোগ ঘাটালের সুলতানপুরের বালিডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দাদের।
তাঁরা জানান, ওই রাস্তার মেরামতির কথা উল্লেখ করে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছিল। কিন্তু, প্রশাসন এখনও পর্যন্ত এ প্রসঙ্গে কোনও ইতিবাচক ভূমিকা নেননি বলে দাবি করেন তাঁরা।
বালিডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের রাস্তাটি ওই গ্রামের ১৫০টি পরিবারের নিত্য দিনের কাজে লাগে। শুধু তাই নয়, এই রাস্তা পঞ্চায়েত অফিসে যাওয়ারও জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এই রাস্তার উপরে রয়েছে একটি প্রাইমারি ও একটি হাইস্কুল। পাশাপাশি, ঘাটাল–মনশুকা রাজ্য সড়কের সঙ্গে বালিডাঙা গ্রামের সংযোগ স্থাপনের কাজও করে এই রাস্তা।
বালিডাঙা আদর্শ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক রঘুনাথ জানার আক্ষেপ, ‘রাজ্য সরকার উন্নয়নের প্রচার করে। অথচ আমরা সারা বছর এই বেহাল রাস্তা নিয়েই নিত্য দিনের কাজ করছি।’
এলাকার আরও এক বাসিন্দা ঝর্ণা চক্রবর্তীর বলেন, ‘রাস্তা সংস্কারের জন্য পঞ্চায়েত থেকে লোক এসে দেখেও গিয়েছিলেন। ভেবেছিলাম, এ বারে হয়তো বেহাল রাস্তার হাল ফিরবে। কিন্তু তা আর হলো না।’
তাঁর আরও অভিযোগ, অল্প বৃষ্টিতেই রাস্তায় জমে হাঁটুসমান কাদা। সেই কাদা প্রতি দিনের কাজে সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। বড় কোনও বিপদের আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তাই, বর্ষায় কার্যত ঘরবন্দি হয়েই থাকতে হয় তাঁদের।
স্থানীয়দের আরও দাবি, গত বন্যায় রাস্তার অবস্থা এতটাই খারাপ হয়েছিল যে, সাত মাস যাতায়াতের জন্য ভরসা ছিল বাঁশের সাঁকো। তবে, তার পরে নাকি গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে মাটি ফেলে রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছিল বলে জানাচ্ছেন তাঁরা। কিন্তু তার সঙ্গেই অভিযোগ, অপরিকল্পিত ভাবেই চলছিল রাস্তার কাজ। রাস্তার পাশে থাকা শিলাবতী নদীগর্ভেই সে মাটির স্থান হয়েছে বলে দাবি তাঁদের।
এ প্রসঙ্গে বালিডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কৌশিক জানা বলেন, ‘ওটা একটা নদীবাঁধ। ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের কাজের জন্য নদীবাঁধ মেরামতির কাজ চলছে। তাই রাস্তাটি এখনই সংস্কার করা হবে না। তার বিকল্প হিসেবে আমরা ঢালাই রাস্তার পরিকল্পনা করেছিলাম। সেই মতো কাজও চলছে। সবটাই হচ্ছে পথশ্রী প্রকল্পের অধীনে।’ আসন্ন বর্ষার আগেই নতুন রাস্তার কাজ শেষ হবে বলে আশাও প্রকাশ করেন পঞ্চায়েত প্রধান।
এ প্রসঙ্গে স্থানীয় পঞ্চায়েতের সমালোচনা করেছেন ঘাটালের বিজেপি বিধায়ক শীতল কপাট। তাঁর প্রশ্ন, ‘মাস্টার প্ল্যানের কাজের সঙ্গে রাস্তার সংস্কারের কাজের কী সম্পর্ক?’ অবিলম্বে স্বচ্ছ ভাবে রাস্তা সংস্কারের দাবি জানিয়ে তাঁর আরও সংযোজন, ‘মানুষের জন্য যখন কাজ হচ্ছে, তখন সব কিছু দেখে, পরিকল্পনা করেই কাজ করা উচিত।’