ট্যাংরা-কসবা কাণ্ডের ছায়া এ বার হুগলির চন্দননগরে। একই পরিবারের ৩ সদস্যের রহস্যমৃত্যুতে শোরগোল। মৃতদের নাম বাবলু ঘোষ(৬২), প্রতিমা ঘোষ(৪৬)। উদ্ধার হয়েছে তাঁদের ১৩ বছরের মেয়ের দেহও। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার গভীর রাতে কলুপুকুর গড়ের ধার এলাকায় নিজেদের বাড়ি থেকেই উদ্ধার হয় তিনজনের দেহ। প্রতিবেশীরা খবর দেন চন্দননগর থানায়। পুলিশ রাত দু'টোর পরে মৃতদের দেহ উদ্ধার করে চন্দননগর হাসপাতালে পাঠায়। চিকিৎসক তিনজনকেই মৃত ঘোষণা করেন। ইতিমধ্যেই দেহগুলি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গৃহকর্তা বাবলু আগে টিনের বাক্স তৈরির কারখানায় কাজ করতেন। পরে টোটোও চালিয়েছিলেন কিছুদিন। কয়েকদিন আগে বাড়িতেই ছোট মাপের ব্যবসা শুরু করেছিলেন। আর সেই ব্যবসার জন্য বাজার থেকে কয়েক লক্ষ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন তিনি। তদন্তকারীদের অনুমান, দেনা শোধ করতে না পেরে প্রথমে স্ত্রী ও মেয়ের মাথায় শাবল দিয়ে আঘাত করে খুন করেন বাবলু। পরে আত্মঘাতী হন। যদিও তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে নিশ্চিত ভাবে কিছু বলা সম্ভব নয় বলে জানাচ্ছে পুলিশ।
বাবলুর প্রতিবেশী এবং আত্মীয়দের সঙ্গে কথা বলে আরও তথ্য জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। বাবলুর প্রতিবেশী প্রদীপ দে বলেন, ‘আমরা বাবলুকে বহু বছর ধরে চিনি। সকলের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতেন। কিন্তু দেনার দায়ে আত্মহত্যার বা পরিবারকে সবাইকে খুন করার যে প্রবণতাটা আজকাল দেখা যাচ্ছে, তা অত্যন্ত ভয়াবহ। কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। ওঁদের নিজেদের বাড়ি ছিল। সেটা বিক্রি করে দিতে পারতেন। স্ত্রী ও মেয়েকেও মেরে ফেললেন, এটা ভেবে কষ্ট হচ্ছে।’
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ট্যাংরা এবং কসবাতে এই ধরনের ঘটনা দেখা গিয়েছিল। শুধু তাই নয়, হরিয়ানার পঞ্চকুলায় এক পরিবারের সাতজনের মৃত্যুও দেনার জন্য বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করছেন তদন্তকারীরা। হুগলির চন্দননগরের ঘটনা প্রসঙ্গে চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের এসিপি সুমন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘মা ও মেয়ের দেহ পাওয়া গিয়েছে খাট থেকে। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে তাঁদের রড দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল। চিলেকোঠাতে বাবলু ঘোষের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে। ঘটনায় সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’