এই সময়: শীর্ষ আদালত ৬ সপ্তাহ সময় বেঁধে দিয়েছে। তার মধ্যে পার হয়ে গিয়েছে দু’সপ্তাহ। বকেয়া মহার্ঘ ভাতার (ডিএ) ২৫ শতাংশ মেটানো নিয়ে এখনও পর্যন্ত সরকারি ভাবে কোনও উদ্যোগ চোখে পড়েনি কর্মীদের।
তবে সূত্রের খবর, রাজ্যের অর্থ দপ্তর বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি পাঠিয়ে খোঁজ নিচ্ছে সেখানে কর্মী-সংখ্যা কত। আদালতের নির্দেশে যাঁরা ডিএ পাবেন, সেই কর্মীর সংখ্যারও হিসেব চলছে। তবে এ সবের খোঁজ মানেই ডিএ দেওয়ার প্রস্তুতি এমন কথা কোনও আধিকারিকই বলছেন না।
কারণ এখনও প্রশাসনের শীর্ষ স্তর থেকে এই বিষয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলা হয়নি। তবে কর্মীদের একাংশ আশায় বুক বাঁধছেন যে, শীর্ষ কোর্টের নির্দেশ মেনে সরকার এ বার তাঁদের ‘প্রাপ্য’ ডিএ মিটিয়ে দেওয়ার পথেই হাঁটবে।
গত ১৬ মে সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যের মহার্ঘভাতা (ডিএ) সংক্রান্ত মামলায় রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া ডিএ-র ২৫ শতাংশ মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। ওই নির্দেশে বলা হয়েছিল, ছ’সপ্তাহের মধ্যে রাজ্য সরকারকে তা মিটিয়ে দিতে হবে। সূত্রের খবর, সম্প্রতি অর্থ দপ্তর জানতে চেয়েছে, রাজ্যের কোন দপ্তরে কত জন মহার্ঘভাতা প্রাপক রয়েছেন।
বর্তমানে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে স্থায়ী কর্মীর সংখ্যা আড়াই লক্ষের মতো। সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষকের সংখ্যা প্রায় ৩ লক্ষ ৮০ হাজার। বিভিন্ন পঞ্চায়েত, পুরসভা, পুরনিগম-সহ সরকারপোষিত স্বশাসিত সংস্থায় কর্মরত কর্মচারীর সংখ্যা আরও এক লক্ষের মতো।
এর বাইরে রয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীরা। সে ক্ষেত্রে বর্তমানে কর্মরত কত জন ডিএ পাওয়ার যোগ্য, সেটা তো বটেই, পাশাপাশি কত জন অবসরপ্রাপ্ত কর্মী ওই ডিএ পাওয়ার আওতাভুক্ত, তা-ও দপ্তরগুলিকে জানাতে বলা হয়েছে।
বাম আমলে, ২০০৯ সালে পঞ্চম বেতন কমিশনের অধীনে জারি হওয়া রিভিশন অফ পে অ্যান্ড অ্যালাউন্স (রোপা)–এর মেয়াদ শেষ হয় ২০১৯ সালে। ফলে ২০১৯ সালের পরে যাঁরা সরকারি চাকরিতে যোগ দিয়েছেন, তাঁরা ওই ২৫ শতাংশ ডিএ পাবেন না। যাঁরা ২০০৯ সাল বা তার আগে থেকে সরকারি চাকরিতে কর্মরত রয়েছেন বা ছিলেন, তাঁরাই শুধু এই ১০ বছরের সময়কালে বকেয়া থাকা ডিএ-র সুবিধা পাবেন।
যদিও সরকারি ভাবে এই খোঁজখবরের বিষয়ে মুখ খুলতে চাইছেন না কোনও দপ্তরের আধিকারিকরাই। তাঁরা বলছেন, যতক্ষণ না কোনও নির্দেশিকা সরকারি ভাবে জারি হচ্ছে, ততক্ষণ কিছু বলা যাবে না।
এমনকী তৃণমূল সমর্থিত রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের আহ্বায়ক প্রতাপ নায়েকও বলছেন, ‘আমাদের কাছে এমন কোনও খবর এখনও পর্যন্ত নেই। তবে সরকার যে সিদ্ধান্তই নিক, আমাদের সমর্থন থাকবে।’