• কলকাতা ও ১১টি জেলায় আজ লাল সতর্কতা জারি
    এই সময় | ২৯ মে ২০২৫
  • এই সময়: দ্রুত পট পরিবর্তন বঙ্গোপসাগরে। মঙ্গলবার সকালে ওডিশার উত্তর উপকূলের কাছে সমুদ্রের উপর তৈরি নিম্নচাপটি বুধবার ভোর সাড়ে পাঁচটা নাগাদ শক্তি বাড়িয়ে সুস্পষ্ট নিম্নচাপে পরিণত হয়েছিল।

    মৌসম ভবন জানিয়েছিল, ওই সুস্পষ্ট নিম্নচাপ আরও কিছুটা শক্তি বাড়াতে চলেছে। আজ, বৃহস্পতিবার ভোরের দিকে সুস্পষ্ট নিম্নচাপটির গভীর নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনার কথা শুনিয়ে রেখেছেন আবহবিদরা।

    তাঁদের অনুমান, বুধবার সারাদিন ধরে ধীর গতিতে বঙ্গোপসাগরের উত্তর দিকে এগোনোর সময়ে সুস্পষ্ট নিম্নচাপটি ক্রমশ শক্তি সঞ্চয় করেছে। বাংলার উপকূলের খুব কাছে সমুদ্রের উপরে তৈরি এই সিস্টেমের প্রভাবেই আজ দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায় তুমুল বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন আবহবিদরা।

    বুধবার আলিপুর হাওয়া অফিস কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের ন’টি জেলায় ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির লাল সতর্কতা জারি করেছে। উত্তরবঙ্গের তিনটি জেলাতেও জারি হয়েছে লাল সতর্কতা। এ ছাড়া দক্ষিণবঙ্গের বাকি ছ’টি এবং উত্তরের পাঁচটি জেলার প্রায় সবগুলিতেই মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি ও সঙ্গে দমকা হাওয়ার হলুদ সতর্কতা জারি হয়েছে।

    বুধবার হাওয়া অফিস জানিয়েছে, আজ বৃহস্পতিবার দক্ষিণবঙ্গের কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব বর্ধমান, পূর্ব মেদিনীপুর, নদিয়া ও মুর্শিদাবাদে অতিভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা খুব বেশি। একই সঙ্গে আজ উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার ও জলপাইগুড়িতেও অতিভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।

    কোনও জায়গায় ২৪ ঘণ্টায় ৭ থেকে ১১ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টি হলে আবহাওয়া বিজ্ঞানের পরিভাষায় তাকে ‘ভারী বৃষ্টি’ এবং ৭ থেকে ২০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টি হলে তাকে ‘অতিভারী’ বৃষ্টি বলা হয়।

    আগামিকাল শুক্রবার, ৩০ মে উত্তরবঙ্গের জন্য বিশেষ সতর্কবার্তা ঘোষণা করা হয়েছে। সে দিন কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং ও কোচবিহারে অতিভারী বৃষ্টির সতর্কবার্তার পাশাপাশি আলিপুরদুয়ারের কিছু কিছু জায়গায় ২০ সেন্টিমিটারেরও বেশি বৃষ্টির অর্থাৎ ‘চরম ভারী’ বৃষ্টির লাল সতর্কতা জারি হয়েছে।

    সে দিন উত্তরবঙ্গের বাকি জেলাগুলোয় ভারী বৃষ্টি ও দক্ষিণবঙ্গের সব জেলাতেই হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। হাওয়া অফিস জানিয়েছে, নিম্নচাপ-প্রভাবিত এই ঝড়-বৃষ্টির পর্ব দক্ষিণবঙ্গে ৩১ মে এবং উত্তরবঙ্গে ১ মে পর্যন্ত চলবে।

    বঙ্গোপসাগরে ঘনিয়ে ওঠা নিম্নচাপের দৌলতে দেশের পূর্ব দিকে যখন বড় রকমের দুর্যোগের আশঙ্কা করা হচ্ছে, সেই সময়ে দেশের পশ্চিম উপকূলের অবস্থাও প্রায় একই রকম থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে কয়েক দিন আগেও আরব সাগরের যা পরিস্থিতি ছিল, তাতে একটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির আশঙ্কা খুব বেশি ছিল।

    কিন্তু বুধবার পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড় তৈরি নিয়ে কোনও পূর্বাভাস দেয়নি মৌসম ভবন। ইতিমধ্যেই দেশের পশ্চিম উপকূলে তুমুল বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সামনের কয়েক দিন কেরালা, তামিলনাড়ু, কর্নাটক ও মহারাষ্ট্রে বৃষ্টির প্রাবল্য জারি থাকবে বলে জানানো হয়েছে। আবহাওয়া বিজ্ঞানের পুরোনো আপ্তবাক্য অনুযায়ী, বর্ষা নেমে গেলে আর ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা থাকে না। এ বার পশ্চিম উপকূলে নির্ধারিত সময়ের অনেক আগে বর্ষা নেমে যাওয়ার জন্যেই হয়তো ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা কমেছে।

  • Link to this news (এই সময়)