• মুখ্যমন্ত্রীর নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও বারবার কাটমানির ‘আবদার’ পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামীর!
    আনন্দবাজার | ২৮ মে ২০২৫
  • মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কড়া হুঁশিয়ারি রয়েছে। তবুও কাটমানিকেই নিজের ‘হক’ বলে মনে করেছেন এক পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী। অভিযোগ, বাংলা আবাস যোজনার টাকা থেকে ‘আবদার’ করে সেই কাটমানি উপভোক্তার কাছ থেকে আদায়ও করেছেন তিনি। পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার বরমপুর গ্রামের ঘটনা। টাকার জন্য চাপ দিয়ে কথপোকথনের সেই অডিয়ো ক্লিপ ছড়িয়ে পড়েছে সমাজমাধ্যমে। যদিও এই অডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম।

    অভিযোগ, প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকা অ্যাকাউন্টে ঢোকার পরেই ৫ হাজার টাকা ‘কাটমানি’ হিসাবে বুঝিয়ে দিতে হয়েছিল পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামীর হাতে। তারপরে উপভোক্তা দ্বিতীয় কিস্তির ৬০ হাজার টাকা পেলে তা থেকেও ফের ৬ হাজার টাকা ‘কাটমানি’ দাবি করা হয়েছে। বারবার ফোন চাপ দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ। নিজের প্রাপ্য থেকে বারবার কাটমানি দিতে বাধ্য হওয়ায় তিতিবিরক্ত কাটোয়া-১ নম্বর ব্লকের আলমপুর গ্রামপঞ্চায়েতের ৮ নম্বর সংসদের বরমপুর গ্রামের দাসপাড়ার বাসিন্দা চাঁদু দাস। মোবাইলে কথপোকথনের অডিয়ো রেকর্ডিং-সহ বিডিওর কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি। এই প্রসঙ্গে কাটোয়া-১ ব্লকের বিডিও ইন্দ্রজিৎ মারিক বলেন, ‘‘অভিযোগপত্র এখনও হাতে পাইনি। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব।’’

    অভিযোগকারী পেশায় দিনমজুর। তিনি জানিয়েছেন, পঞ্চায়েত সদস্যা ভরি দাসের স্বামী সঞ্জয় দাস প্রথম দফার পরে দ্বিতীয় দফার টাকা থেকেও কাটমানি দিতে জোর করছেন। চাঁদুর দাবি, দু’দিন আগে টাকা চেয়ে সঞ্জয় তার ছেলে বাপ্পার মোবাইলে ফোন করে। সেখানে সঞ্জয় বলেন ৬ হাজার টাকা অফিসে লাগবে। আগের টাকা পার্টি ফান্ডে লেগেছিল বলেও দাবি করেন তিনি। চাঁদু বলেন,‘‘অফিস থেকে আমার ঘরের ছবি যাঁরা তুলতে এসেছিলেন তাঁদের কেউ আমাদের কাছে টাকা চাননি। ওঁরা এসে ছবি তুলে চলে গিয়েছেন। কিন্তু তাঁদের নাম করে সঞ্জয় টাকার জন্য চাপ দিচ্ছে।’’ কথপোকথনের বিষয়টি স্বীকার করলেও সঞ্জয়ের সাফাই, ‘‘ আমার কাছে চাঁদু ২০ হাজার টাকা ধার নিয়েছিলেন। সামনে গ্রামের পুজো। তাই আমি টাকা ফেরতের জন্য ফোন করেছিলাম। তাতে ওঁর সম্মানে লেগেছে বলে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে। আবাস যোজনার সঙ্গে এর কেনও সম্পর্ক নেই।’’

    আলমপুর পঞ্চায়েত প্রধান মোল্লা নজরুল হক বলেন,‘‘যিনি অভিযোগ তুলছেন তিনি এখনও পর্যন্ত পঞ্চায়েতে কিছু জানাতে আসেননি। কাটমানি চাওয়ার অভিযোগ থাকলে ওঁর উচিত ছিল স্থানীয় পঞ্চায়েত অফিসে বিষয়টি জানানো।’’ জেলা পরিষদের সভাধিপতি শ্যামাপ্রসন্ন লোহার বলেন, ‘‘অভিযোগ পাইনি। তবে খোঁজ নিয়ে দেখছি। অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রশাসন তার ব্যবস্থা নেবে।’’

    অন্য দিকে, প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে কাটোয়া-১ ব্লকে মোট ১৮৬৬ জন উপভোক্তার জন্য বাংলা আবাস যোজনার অনুদান বরাদ্দ হয়েছে। তার মধ্যে আলমপুর পঞ্চায়েত এলাকায় প্রথম কিস্তির টাকা পেয়েছেন ২১৬ জন ও দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পেয়েছেন ২০৫ জন।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)