এই সময়, আলিপুরদুয়ার: লোকালয়ে বন্যপ্রাণীদের আনাগোনা রুখতে উত্তরবঙ্গে সফরে এলেই সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ভেতরে প্রচুর পরিমাণে তৃণভূমি তৈরি করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সেই পরামর্শ মেনেই চলতি বছরে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের ২১৬.৫১ এক বর্গ কিলোমিটারের সংরক্ষিত অরণ্যে অতিরিক্ত ৪০০ হেক্টর তৃণভূমি তৈরি করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে জলদাপাড়া বনবিভাগ।
যার জন্য ২০ হেক্টরের নার্সারি তৈরি করে সেখানে বড় করা হয়েছে তৃণভোজী বন্যপ্রাণীদের অতি প্রিয় ১২ প্রজাতির ঘাসের চারা। যা বর্ষার মধ্যে প্রতিস্থাপন করা হবে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে। সেই কাজ জোরকদমে চলছে।
ওই বিশেষ প্রজাতির ঘাসগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ঢাড্ডা, চেপটি, মধুয়া, মালশা, পুরুন্ডি ও ভুট্টা ঘাস। সমীক্ষায় উঠে এসেছে যে, বুনো হাতিরা ঢাড্ডা ও চেপ্টি ঘাস খেতে খুবই পছন্দ করে। অন্যদিকে একশৃঙ্গ গন্ডাদের প্রিয় ঘাস মধুয়া ও মালশা।
বাদবাকি তৃণভোজী বন্যপ্রাণীদের মধ্যে বাইসন ও বিভিন্ন প্রজাতির হরিণরা অবশ্য সব ঘাসেই ভাগ বসায়। এই মুহূর্তে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে সঠিক সংরক্ষণের ফলে শুধুমাত্র একশৃঙ্গ গন্ডারদের সংখ্যা ৩৩০ পার করেছে।
সারা বছর ধরে ঘুরে ফিরে এখানে বসত করে ২০০–র বেশি বুনো হাতি। বাইসনের সংখ্যাও ২৫০০ কম নয়৷ সঙ্গে রয়েছে নানা প্রজাতির হরিণরা। এই পরিসংখ্যান থেকেই স্পষ্ট যে, জলদাপাড়ায় বন্যপ্রাণীদের চাপ ঠিক কতটা।
নিয়মিত ভাবে প্রতি বছর বর্ষার আগে জলদাপাড়ায় নতুন তৃণভূমি তৈরি করার কাজ করা হলেও, এবার সেই আকারকে আরও সুবিন্যস্ত করতে বিশেষ ভাবে উদ্যোগী হয়েছে জলদাপাড়া বনবিভাগ।
জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের সহকারী বন্যপ্রাণ সংরক্ষক নভোজিত দে বলেন, ‘জলদাপাড়ার তৃণভোজী বন্যপ্রাণীদের খাবারের ভান্ডার সুনিশ্চিত করতে ও বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্যকে ঠিক রাখতে এ বার আমরা অতিরিক্ত ৪০০ হেক্টর জমিতে তৃণভূমি তৈরি করছি। খুব শীঘ্রই তা চালু হয়ে যাবে।’