• ৪ কোটি টাকার ত্রাণের চাল উধাও, CBI তদন্তের দাবি
    এই সময় | ২৮ মে ২০২৫
  • এই সময়, কাকদ্বীপ: প্রাকবর্ষার বৃষ্টি ও নিম্নচাপের ফলে দুর্যোগের মেঘ ঘনিয়েছে সুন্দরবন উপকূলে। বিপর্যয় সামাল দিতে খোলা হয়েছে ফ্লাড সেন্টার, মজুত রাখা হচ্ছে শুকনো খাবার।

    এর মধ্যেই প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য বরাদ্দ চালে ব্যাপক দুর্নীতি প্রকাশ্যে চলে এলো। সুন্দরবনের কাকদ্বীপ মহকুমার নামখানা, কাকদ্বীপ, পাথরপ্রতিমা ও সাগর ব্লকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য বরাদ্দ প্রায় ১২৪৫ মেট্রিক টন সরকারি চাল (জিআর) হোলসেলারের গুদাম থেকে উধাও। যার বাজার মূল্য প্রায় ৪ কোটি টাকা।

    গত ২০১৫ থেকে ২০২১ অর্থবর্ষের মধ্যে বরাদ্দ করা হয়েছিল এই চাল। অভিযুক্ত হোলসেলার অমিত ভকতের বিরুদ্ধে কাকদ্বীপ থানায় এফআইআর করেছেন কাকদ্বীপের মহকুমাশাসক। তার বিরুদ্ধে সরকারি সম্পদ অপব্যবহার ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইনে মামলা রুজু করেছে পুলিশ। এফআইআরের পরই গা ঢাকা দিয়েছে অমিত।

    এই দুর্নীতিতে সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছেন মথুরাপুর সাংগঠনিক জেলার বিজেপি নেতৃত্ব। সরাসরি শাসক দল ও সরকারি আধিকারিকদের দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে বিজেপি।

    বিজেপি নেতা অরুণাভ দাসের অভিযোগ, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে রেশনের খাদ্য সামগ্রীর পাশাপাশি সুন্দরবনে প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য বরাদ্দ চালের দুর্নীতি নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছি। এ বার কাকদ্বীপ মহকুমা শাসক পুলিশের কাছে হোলসেলারের বিরুদ্ধে এফআইআর করে সেই দুর্নীতিতে সিলমোহর লাগিয়ে দিলেন। ভালো করে তদন্ত করলে এই দুর্নীতির সঙ্গে শাসকদলের নেতা ও সরকারি আধিকারিকদের যোগ পাওয়া যাবে।’

    প্রশাসন ও পুলিশ সূত্রের খবর, জেলা খাদ্য দপ্তরের তালিকাভুক্ত হোলসেলার অমিত ভকতের বিরুদ্ধে ২০২৩ সালে রেশনের কয়েকশ কুইন্টাল চাল গরমিলের অভিযোগ ছিল। খাদ্য দপ্তরের অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার হয় ওই হোলসেলার।

    বর্তমানে সে জামিনে মুক্ত। কিন্তু তদন্ত বন্ধ রাখেনি জেলা খাদ্য দপ্তর ও কাকদ্বীপ মহাকুমা প্রশাসন। বেশ কয়েক বছর আগে থেকে এই হোলসেলারের গুদামে মজুদ চালের বরাদ্দ নিয়ে খুঁটিনাটি তদন্ত চলছিল। সেই তদন্তে ফের মজুত চালের হিসেবের গরমিল প্রকাশ্যে চলে আসে।

    তবে বিরোধীদের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে তৃণমূল নেতা তথা দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি শ্রীমন্ত মালি বলেন, ‘মহকুমা প্রশাসন তদন্ত করে চালের গরমিল পাওয়ার পর এফআইআর করেছে। তবে দুর্যোগ এলে ত্রাণের চালের সঙ্কট হবে না। প্রশাসন আইন মেনেই হোলসেলারের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে। এখানে বিরোধীদের লাফালাফি করার কোনও কারণ খুঁজে পাচ্ছি না।’

    কাকদ্বীপের বিদ্যানগরে গিয়ে দেখা যায় হোলসেলার অমিতের গুদাম তালাবন্ধ। বাড়িতে গিয়েও তার খোঁজ পাওয়া যায়নি। কাকদ্বীপের মহকুমা শাসক মধুসূদন মণ্ডল এবং মহকুমা প্রশাসনের কোনও আধিকারিক বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি।

  • Link to this news (এই সময়)