পূর্ব মেদিনীপুরের পরে উত্তর ২৪ পরগনা। চিপস চুরির সন্দেহে অপবাদ দেওয়াকে কেন্দ্র করে এক নাবালকের আত্মহত্যার ঘটনার রেশ এখনও কাটেনি। এরই মধ্যে বিস্কুট চুরির সন্দেহে এক নাবালককে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠল এক দোকানদারের বিরুদ্ধে। সোমবার হাবড়া থানার সংহতি স্টেশন লাগোয়া এলাকার ঘটনা। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে পুলিশ কোনও পদক্ষেপ নেয়নি বলেও অভিযোগ পরিবারের। এমনকী পুলিশের বিরুদ্ধে টাকা নিয়ে বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয় বলে অভিযোগ আক্রান্তের বাবার। শেষ পর্যন্ত রাত ১২টার পরে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়।
সংহতি রেলগেট সংলগ্ন এলাকায় মুদি দোকান রয়েছে শচীন্দ্রনাথ দাসের। তাঁর বিরুদ্ধে সপ্তম শ্রেণির ওই ছাত্রকে কাঠের টুকরো দিয়ে মারধর করার অভিযোগ রয়েছে। মারধরের ফলে নাবালকের নাক ফেটে প্রচুর রক্তপাত হয়েছে। ওই নাবালকের বাবা জানিয়েছেন, তিনি সকালে তাঁর ছেলেকে ২০ টাকা দিয়ে কাজে যান। বিকেলে বন্ধুদের সঙ্গে খেলার মাঠে যাওয়ার পথে ওই নাবালক বিস্কুট কিনতে শচীন্দ্রনাথ দাসের দোকানের সামনে দাঁড়ায়। কিছুক্ষণ দাঁড়ানোর পরে দোকান ছেড়ে এগিয়ে যায় ওই নাবালকের কিছু বন্ধু। এরই মধ্যে পাশের দোকানদার শঙ্কর পালের সন্দেহ হয়, ওই নাবালকের দল বিস্কুট চুরি করেছে। এই নিয়ে উত্তেজনা শুরু হতেই নাবালক ও তার বন্ধুদের আটকে রাখতে যায় দোকানদার। ঝামেলার মাঝে নাবালকের তিন বন্ধু পালিয়ে গেলেও, সেখানে আটকে পড়ে এই নাবালক। অভিযোগ, দোকানদার শচীন্দ্রনাথ দাস একটি কাঠের টুকরো নিয়ে নাবালকের উপর চড়াও হন। মারধরে ততক্ষণে নাবালকের নাক থেকে রক্ত পড়া শুরু হয়েছে।
এই পরিস্থিতি স্থানীয়রা ছুটে এসে ওই নাবালককে উদ্ধার করে। স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, নাবালক আহত হলেও দোকানদার তাকে উপেক্ষা করে দোকানের সামনে রক্ত ধুতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন। খবর শুনে এলাকায় আসেন নাবালকের বাবা। তিনি ছেলেকে নিয়ে প্রথমে মছলন্দপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যান। সেখানে চিকিৎসক সিটি স্ক্যান করার পরামর্শ দেন। তার জন্য কলকাতায় যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু সংহতি স্টেশনে যাওয়ার পথে পুলিশ তাঁদের পথ আটকে দেয় বলে অভিযোগ। নাবালকের বাবার অভিযোগ, বাউগাছি পুলিশ ফাঁড়ির এক পুলিশকর্মী অভিযোগ না করে টাকার বিনিময়ে বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার জন্য চাপ দেন। শেষপর্যন্ত সোমবার রাত ১২টা নাগাদ হাবড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। কিন্তু তার পরে দীর্ঘ সময় কেটে গেলেও অভিযুক্তর বিরুদ্ধে পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ।
নাবালককে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত দোকানদার। তাঁর দাবি, তিনি শুধুমাত্র ভয় দেখানোর জন্য লাঠি নিয়েছিলেন। নাবালক পালাতে গিয়ে তার নাকে লেগে যায়। তিনি কাউকে মারেননি বলে দাবি।